বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি তুলে ধরে এই ঘোষণা দেন তিনি।
বাংলাদেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরাই এই প্যাকেজের সুবিধা পাবেন।
শেখ হাসিনা বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে অনেক মানুষ কাজ হারিয়েছেন। আমাদের তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।”
“আমাদের শিল্প উৎপাদন এবং রপ্তানি বাণিজ্যে আঘাত আসতে পারে। এই আঘাত মোকাবেলায় আমরা কিছু আপৎকালীন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।”
তিনি বলেন, “রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য আমি ৫ হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করছি। এ তহবিলের অর্থ দ্বারা কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে।”
নভেল করোনাভাইরাসে গোটা বিশ্বের অর্থনীতিই এখন বিপর্যস্ত; যার প্রভাবে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি শূন্যে নেমে আসার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন এখাতের উদ্যোক্তারা।
বাংলাদেশে রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশই আসে তৈরি পোশাক থেকে।
এই খাতের মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১৮ মার্চ পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ যে আয় করেছিল, তা এই বছরের মার্চে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে অধিকাংশ বিদেশি ক্রেতা পোশাক নিচ্ছে না বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজিএমইএ সভাপতি সভাপতি রুবানা হক দুদিন আগেই বলছিলেন, “প্রতি মিনিটে-ঘণ্টায় পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। এমন দুর্দিন আগে কখনও আসেনি। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন পোশাক শিল্প মালিকরা।”
শিল্পোদ্যোক্তার জন্য আরও কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যবসায়-বান্ধব বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী জুন মাস পর্যন্ত কোন গ্রাহককে ঋণ খেলাপি না করার ঘোষণা দিয়েছে।
“রপ্তানি আয় আদায়ের সময়সীমা ২ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা হয়েছে। একইভাবে আমদানি ব্যয় মেটানোর সময়সীমা ৪ মাস থেকে বৃদ্ধি করে ৬ মাস করা হয়েছে।”
এছাড়া সাধারণ মানুষের সুবিধায় মোবাইলে ব্যাংকিংয়ে আর্থিক লেনদেনের সীমা বাড়ানো; বিদ্যুৎ, পানি এবং গ্যাস বিল পরিশোধের সময়সীমা সারচার্জ বা জরিমানা ছাড়া জুন মাস পর্যন্ত বাড়ানোর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এনজিওগুলোর ঋণের কিস্তি পরিশোধ সাময়িক স্থগিত করার কথাও তিনি বলেন।