নিজস্ব প্রতিবেদক, লালপুরঃ
নাটোরের লালপুরে করোনাভাইরাস আতঙ্কের মধ্যে মানুষ যখন ঘরের মধ্যে তখন রাতারাতি অসহায় মানুষের জায়গা দখল করে বাড়ি তৈরির অভিযোগ সোহাগ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। থানায় অভিযোগ দিয়েও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন, ভুক্তভূগী চকপাড়া নিবাসী রয়জান বেগম। সোহাগ লওদা পাড়া গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে। ঘটনাটি ঘটেছে লালপুর উপজেলার ধুপইল লওদা পাড়া গ্রামে।
রয়জান জানান, ‘১২ বছর আগে লওদা পাড়া গ্রামের সরকার পাড়ায় দূর সম্পর্কের মামা আমজাদ হোসেনের কাছ থেকে ১২শতাংশ জায়গা ক্রয় করি দেড় লাখ টাকায়। কিন্তু জমি রেজিস্ট্রেশন এর সময় আমজাদ মামা আমাকে বলেন দানসত্ব করে দিলে রেজিস্ট্রি করতে কম টাকা লাগবে। তুমি আমার ভাগ্নি। তোমার বেশি টাকা খরচ করাতে চাই না। আমি যেভাবে রেজিস্ট্রি করে দিই সেইভাবেই তুমি নাও। তখন আমাকে সোয়া ৬ শতাংশ জায়গা তিনি রেজিস্ট্রি করে দেন। পরে অন্য জমির রেজিস্ট্রি করে দেয়ার কথা বললে তিনি টালবাহানা শুরু করেন। পরে এক পর্যায়ে তিনি তার রেজিস্ট্রি করে দেওয়া জমির বিপরীতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাতেও আমজাদ আদালতে হেরে যান। এমতাবস্থায় ২৪ মার্চ গভীর রাতে সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমজাদের ছেলে সোহাগ ঘর তুলে ফেলে। সকালে উঠে এলাকাবাসীর কাছে শুনে তিনি তার সরকারপাড়ার জমিতে গিয়ে ওই ঘর দেখতে পান। সেই সময় সোহাগ সাঙ্গপাঙ্গসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সেখানে অবস্থান করছিল। তখন আমি ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে অভিযোগ করি সোহাগ এর বিরুদ্ধে। এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা ওবায়েদসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসেন। তাদের সামনেই সোহাগ অস্ত্র নিয়ে আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার জন্য শাসায়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং সোহাগের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ চলে যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন ব্যক্তি জানান, আমজাদ একজন মাদকাসক্ত ও বহুগামী লোক। তিনি সাতটি বিয়ে করেছেন। বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে তার তিনটি স্ত্রী রয়েছে। তার বিরুদ্ধে গাঁজা খাওয়া এবং বিক্রির অভিযোগ রয়েছে। তার ছেলেও গাঁজা বিক্রি করে বিভিন্ন এলাকায়। সরকারি দলে নাম লেখানোর পরে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সোহাগ।
অভিযুক্ত সোহাগের বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয়েছে। তাই আমি এ সম্পত্তি দখলে নিয়েছি। আপনারা মামলায় হেরে গেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, মামলায় হেরে গেলে কি হবে, সম্পত্তি তো আমাদের। আমরা এখানে কাউকে আসতে দেবো না। আপনি অস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখিয়েছেন এমন অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, যে রয়জান তার ঘর ভেঙে দিতে এসেছিল তাই তিনি তাকে শাসিয়েছেন। এ ব্যাপারে সোহাগের বাবা আমজাদকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি অসুস্থতার ভান করে কথা বলতে চাননি।
ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারজাদ হোসেন জানান, অভিযোগের পরে ওবায়দুর এর নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করে। তদন্তে সোহাগ এর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়। কিন্তু যেহেতু সোহাগ তার বাবা অসুস্থ আমজাদকে ঘরের ভিতরে ফেলে রেখে গেছে তাই তাকে সরানো সম্ভব হয়নি। এখন আমরা করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ করা নিয়ে ব্যস্ত আছি। সময় পেলেই অতিসত্বর আমরা সোহাগকে গ্রেপ্তার করে আইনে সোপর্দ করব। তদন্ত কর্মকর্তা ওবায়েদ এর সামনেই হাসুয়া বের করে সোহাগের শাসানোর ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। এই দুঃসময়ে জমি দখল করে যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে তার জন্য সোহাগ এর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর। সেইসঙ্গে সাবেক ইউপি সদস্য জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …