নিউজ ডেস্কঃ
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে ১৫২ জনের মৃত্যু হলো। আক্রান্ত হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৪৯৭ জন। ফলে দেশে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা হয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় চার হাজার ১৯২টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৮১২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব মিলিয়ে নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪০১টি। নতুন যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে তার মধ্যে আরও ৪৯৭ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ফলে করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৯১৩ জনে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মারা গেছেন আরও সাতজন, এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫২ জনে। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন আরও নয়জন। ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন ১৩১ জন।
নতুন করে যারা মারা গেছেন, তাদের ছয়জন পুরুষ ও একজন নারী। পাঁচজন রাজধানী ঢাকার, একজন সিলেট ও একজন রাজশাহীর বাসিন্দা। পাঁচজনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। একজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে এবং ১০ বছরের নিচে একজন শিশু মৃত্যুবরণ করেছে।
বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ৮৫ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ২২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২৯ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ৭৩৮ জন।
সারাদেশে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে নয় হাজার ৭৩৮টি। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে আছে তিন হাজার ৯৪৪টি ও ঢাকার বাইরে পাঁচ হাজার ৭৯৪টি। বর্তমানে করোনা চিকিৎসার জন্য আইসিইউ শয্যা রয়েছে ৩৪১টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট আছে ১০২টি।
এ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টাইন মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে এক লাখ ৭৯ হাজার ৪০১ জনকে। এদের মধ্যে ছাড় পেয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৭২২ জন। বর্তমানে মোট কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭৭ হাজার ৬৭৯ জন। তাদের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারন্টাইনে আছেন ছয় হাজার ৩০৭ জন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৭১ হাজার ৩৭২ জন।
সারাদেশের ৬৪ জেলা এবং সেখানকার উপজেলায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৬০১টি প্রতিষ্ঠান। এর মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে ৩০ হাজার ৬৩৫ জনকে কোয়ারেন্টাইন সেবা দেয়া যাবে।
বুলেটিনের শুরুতে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে দেশের আরও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম শুরুর অগ্রগতি তুলে ধরেন ডা. নাসিমা সুলতানা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধও জানানো হয় বুলেটিনে।
গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ সাত হাজার। তবে পৌনে নয় লাখের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে। নিয়েছে আরও নানা পদক্ষেপ। এসব পদক্ষেপের মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায়, বিশেষত ঘরে রাখা। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশের টহল জোরদার করেও মানুষকে ঘরে রাখা যাচ্ছে না বিধায় করোনাভাইরাসের বিস্তার উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।