বিশেষ প্রতিবেদকঃ
নাটোরের নলডাঙ্গায় রাতের বেলায় বসছে পেঁয়াজের হাট। মাঝ রাত থেকে চলছে ভোর পর্যন্ত এ হাট। পাশাপাশি শনিবার দনভর চলবে পেঁয়াজ বস্তায় তোলা ও ট্রাকের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানোর কাজ। করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে যখন সবাই ভীত এবং সরকারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে দেশবাসীকে ঘরে থাকতে বোঝানোর কাজ, সেখানে কিভাবে হাট বসছে। তাহলে কি এমনটি ভেবে নিতে পারি যে, করোনাভাইরাস হয়তো রাতের বেলা ঘুমিয়ে থাকে, তাই এই সময় হাট খোলা রাখছে নলডাঙ্গা উপজেলা প্রশাসন?
শুক্রবার নলডাঙ্গা ঘুরে দেখা গেছে, বিকেলের দিকে বেশ কিছু ট্রাক হাট এলাকায় এসে অবস্থান নিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে সেগুলে রাতের হাট শেষে পেঁয়াজ নিয়ে যাওয়ার জন্য ভিন্ন জেলা থেকে এসেছে।
অপর দিকে রাত ৯টার পর থেকেই ভ্যান, পাওয়ার ট্রিলার, মিনিট্রাক বা পিকআপসহ বিভিন্ন মাধ্যমে নলডাঙ্গার আশপাশের এলাকা থেকে পেঁয়াজসহ বিভিন্ন পণ্য হাটের দিকে যেতে দেখা গেছে। ভ্যান চালকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে হাট শুরু হওয়ার কথা রাত দুইটায়।
এর আগেও কয়েকটি হাটবার দিনের বদলে রাতে অর্থাৎ গত শনি ও মঙ্গলবার সকালের হাট বসানো হয়েছে আগের রাতে। এবং দিনের বেলা হাট এলাকায় পণ্য বস্তাজাতকরণ ও পরিবহণ হতে দেখা গেছে।
মধ্যরাতের হাট সম্পর্কে জানতে চাইলে নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ নারদ বার্তাকে জানান, ‘নলডাঙ্গা হাট উত্তরাঞ্চলের মধ্যে কাঁচামালের অন্যতম বড় হাট। এখানে শত শত মন পেঁয়াজ বিক্রির জন্য আনা হয়। যদিও এ অঞ্চলের মানুষ কৃষিপণ্য নির্ভরশীল। তারপরও হাট বসতে নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু কোন একটি অসাধু চক্র হাট বসতে সহায়তা করছে রাতের আঁধারে। এতে করে নলডাঙ্গা উপজেলার জনগণ ঝুঁকির মু্খে পড়ছেন। আমি এই উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে বলেছি হাট বন্ধ করতে। হাটে বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসছেন এবং যারা বিক্রির উদ্যশ্যে আসছেন তাদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত হচ্ছে না।’
এ বিষয়টি দুই রকম হতে পারে। প্রথমত নলডাঙ্গা অঞ্চলের মানুষ কৃষি পণ্য নির্ভরশীল। এখন পেঁয়াজ উঠেছে। বিক্রি করতে পারলে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা থাকবে কিংবা এই সংকটময় সময়ে পেঁয়াজের ঘাটতি থাকবে না। কিন্তু সবথেকে বড় প্রশ্ন রাতের আঁধারে কি সামাজিক দূরত্ব বজায় থাকছে? নাটোরের বিভিন্ন স্থানে হাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সেখানে নলডাঙ্গা হাট চালানো কতটা যৌক্তিক। কারণ পেঁয়াজগুলো যাচ্ছে বেশিরভাগ ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে। ঢাকা যাতায়াত করছে পণ্যবাহী যে সকল ট্রাক সেই ট্রাকের ড্রাইভার, ক্রেতারা বাহির থেকে আসছেন। সেক্ষেত্রে এলাকাটি করোনাভাইরাস ছড়ানোর তালিকায় থাকছে বলে মনে করছেন অনেকে।