সিংড়া থেকে রাজু আহমেদ
তৃনমূলে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে কমিউনিটি ক্লিনিক। সিংড়া উপজেলার ৪২ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রায় ৫ লক্ষ জনগন এ সেবা পাচ্ছে।
পাকুরিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত সিএইচসিপি প্রকাশ কুমার সাহা জানান, সরকার তৃনমূল স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সেবা দিচ্ছেন। গ্রামের মানুষ বিনামূল্যে ২৯ প্রকার ঔষধ পায়। সপ্তাহে শুক্রবার ও সরকারী ছুটি বাদে প্রতিদিন গ্রামের জনগন সেবা পাচ্ছে। গ্রামীণ জীবনে স্বস্থি এনেছে কমিউনিটি ক্লিনিক। ক্লিনিকের মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে লাল-সবুজ মোড়কে জড়ানো ৩২ ধরনের ওষুধ। বিভিন্ন রোগে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের ভরসা এখন বিনামূল্যে দেয়া এসব ওষুধ দেয়া হয়। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিন্তার ফসল। দেশের ক্লিনিকগুলোতে রোগীদের ৩২ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। গ্রাম পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে।
প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে দেশে ১৩ হাজার ৮৬১টি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্য সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও আরও ১ হাজার ২৯ টি ক্লিনিক নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে ৩২ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, পরিবার এবং মাতৃসেবা দেয়া হয়। ২০০০ সালের ২৬ এপ্রিল এই কার্যক্রমের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের এই কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের কারণে দেশের দরিদ্র মানুষ সঠিক ভাবে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে। পাশাপাশি তারা বিনামূল্যে ৩২ রকম ওষুধ পেয়ে থাকে। এই কারণেই ক্লিনিকগুলোতে রোগীর সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক রেড়েছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৮০ জন রোগীকে এখান থেকে সেবা দেয়া হয়।
সিএইচসিপি রমিজুল করিম, আফসানা খাতুন ও কোহিনুর জানান, কমিউনিটি ক্লিনিকে সব চিকিৎসা হয়। ওষুধ কিনতে হয় না। ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হয়। আগে শহরে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতো। সময় লাগতো বেশি, টাকাও খরচ হতো। কিন্তু এখন আর শহরে যেতে হয় না। সাধারণ রোগের চিকিৎসা তারা এখান থেকেই পাচ্ছেন। কমিউনিটি ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা আশরাফুল, শফিক, মরিয়ম বলেন, গত কয়েক দিন যাবত হাঁপানি ও শ্বাস কষ্টে ভুগছি। আমার পক্ষে ১৪ কিলোমিটারেরও বেশি দূরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই বাড়ির কাছে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা নিতে এসেছি। এখানে সেবার পাশাপাশি বিনামূল্যে ওষুধ-পত্র আমরা পেয়ে থাকি। কমিউনিটি ক্লিনিক সম্পর্কে ডাঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবার কারণেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ গ্রামীণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান বেড়েছে। হাতের কাছে ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ পেয়ে সবাই খুশি। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার হওয়ায় সাধারণ মানুষের আস্থাও বেড়েছে।
তিনি বলেন, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা (সিএইচসিপি) শুক্রবার এবং সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত ক্লিনিকে উপস্থিত থাকেন। তারা ক্লিনিক খোলা এবং বন্ধ করা, রোগীর উপস্থিতি রেজিস্টারে নাম তোলা, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করাসহ তাদের কর্মপরিধির আওতাধীন এই মুহূর্তে যে সব কর্মকান্ড পরিচালনা করা সম্ভব তা করেন।