নিউজ ডেস্ক:
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওটি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনৈক যতন সাহাকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ভিডিওটির শুরুতেই লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশের নোয়াখালীর পূজামণ্ডপে হিন্দু মহাজোট কর্মী যতন সাহা হত্যা’। অথচ ভিডিওটি সম্পূর্ণ অন্য একটি ঘটনার।
ভিডিওটির শেষে ‘দেবেন্দ্রিতা ভৌমিক’ নামে একজনের নাম লেখা রয়েছে। ভিডিওটির শেষে তিনি লিখেছেন ‘যতক্ষণ সুযোগ পাওয়া যায়, ততক্ষণ একসাথে সময় কাটিয়ে নেওয়া ভালো। কে জানে, এটাই হয়তো শেষ বার।’
যাচাই করে জানা গেছে, ভিডিওটি মূলত রাজধানীর মিরপুরের একটি ঘটনার। এই ভিডিওটি দিয়ে সাম্প্রতিক সহিংসতা সংক্রান্ত ভিডিও বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে।
ঘটনাটি চলতি বছরের ১৬ মে বিকেল ৪টায় জায়গা-জমির বিরোধের বিষয়ে মীমাংসার কথা বলে ভিকটিম শাহীন উদ্দিনকে পল্লবী থানার ডি ব্লকের একটি গ্যারেজের ভেতর নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার ভিডিও। ওই ঘটনায় মূল আসামি আব্দুল আউয়ালসহ আরও ৩ জনকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল শাহীন হত্যাকাণ্ডের এই ভিডিওটিকে সাম্প্রতিক সহিংসতাকেন্দ্রিক ঘটনার ভিডিও বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে।
চ্যানেল টোয়েন্টিফোর থেকে প্রচারিত এক ভিডিও প্রতিবেদন থেকেও এর সত্যতা মেলে।
আরও খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে, ঘটনাটি ঘটেছিল চলতি বছরের মে মাসে। রাজধানীর পল্লবীতে সন্তানের সামনে সাহিনউদ্দিন (৩৩) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে প্রচার করা হচ্ছে নোয়াখালীতে হিন্দু মহাজোট কর্মী যতন সাহাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর ভিডিওটি ফেসবুক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্ক্রিনশটে দেখা যাচ্ছে, সেই পেইজ ও ভিডিওর ছবি।
সাম্প্রতিক সময়ে এভাবেই নানা গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে দুর্বৃত্তরা। এর আগেও একাধিকবার গুজব ছড়িয়ে রামু, নাসিরনগর, শাল্লাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যাচাইবাছাই না করে গুজবে কান দেওয়া যাবে না। যেকোনো ঘটনা বা ভিডিও সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত না হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো ধরনের প্রচার, পোস্ট বা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে বলছেন তারা।