নিউজ ডেস্ক:
সমুদ্রনগরী কক্সবাজারে বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র আধুনিক ক্রীড়াঙ্গনের রূপকার শহীদ শেখ কামালের নামে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
দেশে এই প্রথম সরকারি অর্থে তিনটি খেলার মাঠ ও একটি পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট প্র্যাকটিস মাঠ নিয়ে তৈরি হচ্ছে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স।
এতে থাকবে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ফুটবল স্টেডিয়াম, শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও একটি হকি স্টেডিয়াম এবং একটি পূর্ণাঙ্গ প্র্যাকটিস গ্রাউন্ড।
এ ছাড়া ক্রীড়া কমপ্লেক্সটিতে অন্যান্য খেলাধুলার সুযোগ থাকবে। এ জন্য এটিকে মাল্টিপারপাসভাবে যাতে ব্যবহার করা যায় সে লক্ষ্যে প্রায় ৫০ একর জমির ওপর নির্মাণ করা হচ্ছে অত্যাধুনিক আধুনিক মানের এ ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি।
এ ব্যাপারে রোববার ২৭ দুপুরে কক্সবাজারের স্থানীয় একটি হোটেলে এক সভা হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দিন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদের সভাপতিত্বে শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রকল্পে ডিপিপি প্রণয়নে অংশীজন সভায় সংসদ সদস্য আশিক উল্লাহ রফিক, চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার মো. আশরাফ উদ্দিন, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ, ক্রীড়া পরিদপ্তরের পরিচালক কে এম আলী রেজা, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী, সেনাবাহিনী নৌবাহিনীর প্রতিনিধি, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।
ক্রীড়া কমপ্লেক্স নিয়ে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারের মতো এতো সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় এ ধরনের স্থাপনা করতে যাচ্ছি। এটি পুরোটাই প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ব্যক্তিগত ইচ্ছা এবং আগ্রহের কারণে সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজারে আধুনিকভাবে ফুটবল স্টেডিয়াম, ইনডোর স্টেডিয়াম হচ্ছে।
‘এ জেলার প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করার পরিকল্পনাও আমরা হাতে নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টায় রামুতে বিকেএসপিও করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা স্টেডিয়ামকেও আধুনিকায়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে নান্দনিক ইনডোর স্টেডিয়ামও নির্মাণ করা হচ্ছে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সমুদ্রতীরে প্র্যাকটিস মাঠসহ ক্রিকেট, ফুটবল ও হকি স্টেডিয়ামের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও পরিচিতি লাভ করবে। আশা রাখছি বিদেশের খেলাও এই ভেন্যুতে চলবে। পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয়, সেভাবে সবকিছু বিবেচনা করে এই আন্তর্জাতিক ক্রীড়া কমপ্লেক্স হবে।’
‘সাম্পান’ নৌকার আদলে এ স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পশ্চিম দিকে ঝাউবনবেষ্টিত সমুদ্রের দিগন্তজুড়ে এটি তৈরি হচ্ছে। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে প্রাকৃতিক স্থাপনার সাথে খাপ খাইয়ে স্টেডিয়ামের ধারণাটি ‘সাম্পান’ নৌকার আদলে তৈরি করা হচ্ছে। এটি দেখলে মনে হবে- নান্দনিকভাবে সাগরে ৩টি সাম্পান ভাসছে।’
প্রস্তাবিত ক্রীড়া কমপ্লেক্সের অবস্থান কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৩ হাজার ৫০০ ফুট দূরে লাবণী বিচ সড়কে অবস্থিত। এই কমপ্লেক্সে ক্রিকেটে ১৫ হাজার, ফুটবলে ১৫ হাজার এবং হকিতে ৮ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়াম হবে বলে জানানো হয়।
কমপ্লেক্সে থাকবে গ্যালারি, ভিআইপি সুবিধা, রেস্তোরাঁ, মিডিয়া, স্টেডিয়াম প্রশাসন, সেবাকক্ষ, স্টোরেজ, টয়লেট। এ ছাড়া জিমনেশিয়াম ও ইনডোর অনুশীলনে প্রধান ইনডোর নেটব্লক, সেবাকক্ষ, টিভি রুম, টয়লেট। অ্যাকাডেমিতে ডাইনিং, হলরুম, প্রশাসনিক ভবন, কনফারেন্স ভবন, অডিও-ভিজ্যুয়াল কক্ষ ও দৃষ্টিনন্দন পার্কিংয়ের জায়গা।