নিউজ ডেস্ক:
করোনা নিয়ন্ত্রণে ভারতের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা দিয়ে ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী প্রথম ধাপের ৫০ লাখ ও দ্বিতীয় ধাপে ২০ লাখ মোট ৭০ লাখ ডোজ টিকা পেলেও দীর্ঘদিনেও বাকী টিকা না পেয়ে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে চীন-রাশিয়াসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। অবশেষে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দীর্ঘদিনের বন্ধু প্রতিম দেশ চীন। এরই ধারাবাহিকতায় শিগগিরই উপহার হিসেবে দেশে আসছে চীনের সিনোফার্ম উৎপাদিত ‘বিবিআইবিপি-সিওরভি’ ইনঅ্যাক্টিভেটেড টিকা। প্রাথমিক ভাবে ৫ লাখ ২ হাজার ৪শ’ ডোজ দেশে আসছে। উপযুক্ত বিমানের ব্যবস্থা হলে বেইজিং বিমানবন্দর থেকে যেকোন দিন এগুলো দেশে আসবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি এ টিকার সব নথিপত্র যাচাই করেছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করেই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছে কমিটি। এ টিকা বাংলাদেশে আসার পর প্রথমে ১ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। পরে গণটিকাদান কার্যক্রমে সিনোফার্মের টিকা ব্যবহার করা হবে। গত ২৯ এপ্রিল বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রনালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) যুগ্ম সচিব ও শাখা প্রধান মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীকে উল্লেখ করে লেখা এক চিঠিতে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা দূতাবাসের এক কর্মকর্তা।
ওই চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জন্য যে টিকা পাঠানো হবে সেগুলো জন্য বেইজিং বিমানবন্দর ব্যবহার করা হবে। বিশেষ বিমানের মাধ্যমে টিকাগুলি পাঠানো হবে। তবে এখনো যথাযথ বিমানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। তাই সঠিক তারিখ ঘোষণা করা যাচ্ছে না। তবে খুব দ্রæত বিমানের ব্যবস্থা করে পাঠানোর তারিখ নিশ্চিত করা হবে দেশটির পক্ষ থেকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাও বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, চিঠি চালাচালি থেকে সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে আরও আগেই। বিমানের ব্যবস্থা হলেই যে কোন সময় দেশে আসবে টিকা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইনকিলাবকে বলেন, চীনের উপহার হিসেবে ৫ লাখ টিকা আমরা যেকোন সময় পাচ্ছি। এ সপ্তাহেই টিকা আসতে পারে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি কমিটি এ টিকার সব নথিপত্র যাচাই করেছে। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমাদের যে কমিটি আছে, সেই কমিটি এই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়ার জন্য সুপারিশ করেছে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে আমরা চীনের সিনোফার্মের এই টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছি। তিনি বলেন, টিকা বাংলাদেশে আসার পর প্রথমে ১ হাজার মানুষের ওপর প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। আমরা দেখব এই টিকার সেইফটি এবং অ্যাফিকেসি কেমন। এরপর গণটিকাদান কার্যক্রমে সিনোফার্মের টিকা ব্যবহার করা হবে।
শহীদ সোহারওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান চীনের এ টিকার বিষয়ে বলেন, পুরাতন প্রযুক্তির একটি ইনঅ্যাক্টিভেটেড টিকা। ইপিআই’র মাধ্যমে প্রতিবছর কোটি কোটি ডোজ ইনঅ্যাক্টিভেটেড টিকা আমাদের দেশে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া প্রথাম দ্বিতীয় ধাপের ট্রায়ালে এই টিকার নিরাপত্তা এবং কার্যকরিতা প্রমানিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের ৫টি দেশে ৫৫ হাজার মানুষের ওপর এই টিকার তৃতীয় ট্রায়াল পরিচালিত হয়েছে। সবমিলে এই টিকা যথেষ্ট কার্যকর হবে বলে আশা করা যায়।