নিউজ ডেস্ক:
দেশের সার্বিক রপ্তানি পরিস্থিতি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিকে চলতি অর্থবছরে ৫২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের পণ্য রপ্তানির আশা দেখাচ্ছে।
শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ আশার কথা জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
প্রদর্শনী কেন্দ্রের স্থায়ী অবকাঠামো এবং এর বাইরের খোলা মাঠে স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলো ইতোমধ্যেই রঙিন সাজ পেতে শুরু করেছে। তবে সবগুলোর কাজ এখনও শেষ হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মেলার এমন আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি পণ্যের বিপণন ও পরিচিতিতে সুবিধা হয়।
“এবছর ৫২ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। এটা একটি বড় লক্ষ্যমাত্রা হলেও আমরা তা পূরণের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি। এবার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলেই মনে হচ্ছে।“
পূর্বাচলে কাঞ্চন সেতুর কাছে ৪ নম্বর সেক্টরে ২০ একর জমির উপর তৈরি বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে চলছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার প্রস্তুতি। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
গত টানা তিন মাস ধরে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হচ্ছে; একক মাসের রপ্তানি আয়ে রেকর্ড দেখছে বাংলাদেশ। কোভিড মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রিত থাকলে রেকর্ড রপ্তানির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করছেন রপ্তানিকারকরাও।
সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, এবারের মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ২৩টি প্যাভিলিয়ন, ২৭টি মিনি প্যাভিলিয়ন, ১৬২টি স্টল, ১৫টি ফুড স্টল দেশি-বিদেশি কোম্পানিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
নিয়মিত ফুড কোর্টের পাশাপাশি ৫০০ আসনের পর্যটন করপোরেশনের ক্যাফেটেরিয়া রয়েছে মেলায়। রয়েছে এক হাজার পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।
অন্য বছরের মতো এবার প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা আর শিশুদের জন্য ২০ টাকা করে মেলার প্রবেশ টিকেটের মূল্য ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান এএইচএম আহসান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
ভোগান্তির শঙ্কা যাতায়াতে
ঢাকার সঙ্গে পূর্বাচলের সংযোগকারী ৩০০ ফিট সড়কের পুর্ননির্মাণ কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। মেলা উপলক্ষে সড়কটির দুটি লেন পিচঢালা কার্পেটিং করা হলেও যাতায়াতের ভোগান্তি দূর হয়নি।
শুক্রবার ছুটির দিনে মেলাপ্রাঙ্গণে যাওয়ার পথে বালু নদী পাওয়ার পর থেকে পূর্বাচল লেডিস ক্লাব পর্যন্ত সড়কে দীর্ঘ যানজট দেখা যায়। নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় তীব্র ধুলোয় ঝাপসা হয়ে থাকছে সড়কের দুই পাশ।
এবিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, অন্যবছর মেলা শুরুর ছয় মাস আগ থেকে প্রস্তুতি শুরু করলেও এবার মাত্র দুই মাসের প্রস্তুতিতে মেলা শুরু করতে যাচ্ছি। একদিকে মহামারীর শঙ্কা অন্যদিকে যাতায়াত ব্যবস্থার দুর্বলতার বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় ছিল। তবুও এবার সীমিত পরিসরে মেলার আয়োজন করা হলো।
“যাতায়াতের সমস্যা দূর করতে সড়কের কিছু অংশ চলাচল উপযোগী করা হয়েছে। সড়ক মেরামত কাজ ৯০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই পুরোপুরি সম্পন্ন হবে।“
মেলা উপলক্ষে বিআরটিসির ৩০টি বাস রাজধানীর কুড়িলসহ বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ছেড়ে মেলার উদ্দেশ্যে যাবে। কুড়িল থেকে মেলা প্রাঙ্গণের ভাড়া হবে জনপ্রতি ৩০ টাকা।
প্রস্তুতি নেই কারও
সংবাদ সম্মেলন শেষে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ স্টল ও প্যাভিলিয়নের কাজ ৫০ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এতে প্রথম দিনেই সবার পুরোপুরি প্রস্তুত হওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে।
মেলায় ওয়ালটনের প্রডাক্ট ম্যানেজার শুভ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যানজটের কারণে প্যাভিলিয়নের অনেক সামগ্রী মেলা প্রাঙ্গণে সঠিক সময়ে এসে পৌঁছাতে পারেনি। সেকারণে সাজাতে বিলম্ব হয়ে গেছে।
“তবে সারারাত কাজ করার পাশাপাশি শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কাজ করা গেলে, মেলা শুরুর আগেই প্যাভিলিয়ন প্রস্তুত করা যাবে।“