মোঃ মোজাহিদুর রহমান:
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, যশোর-এর সময়োপযোগী উদ্যোগের কারণে আজ ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষারা ঘরে বসেই তাদের ফরম পূরণ করতে পারছে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের এ উদ্যোগে দেশব্যাপী ব্যাপক সাড়া মিলেছে। একমাত্র যশোর শিক্ষা বোর্ডই এ ধরনের নজীরবিহীন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্লা আমীর হোসেনের উদ্ভাবনের ফলে।
সূত্রটি জানায়, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড , যশোর এর বর্তমান চেয়ারম্যানের একের পর এক উদ্ভাবনের ফলে বোর্ডটির শতভাগ কাজ অনলাইনে প্রদান করা হচ্ছে। তার এ নতুন নতুন উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা দেশ ব্যাপী ব্যাপক সাড়া যোগাতে সক্ষম হয়েছে এবং অন্যান্য বোর্ডগুলিও যশোর শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রম অনুসরণ করছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে যশোর শিক্ষাবোর্ডের অনলাইন প্রশ্ন ব্যাংক একটি যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। এছাড়া মোবাইলের মাধ্যমে এসএসসি, এইচএসসি ও বৃত্তির রেজাল্ট প্রদান, অন-লাইনে সনদের ভুল সংশোধন ও স্ংশোধিত সনদের কপি অনলাইনে প্রেরণ সহ সকল ধরনের কাজ অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যশোর বোর্ড অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ একটি যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, যা’ সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। কোভিড-১৯ এর সংক্রামণ এর সময় পরীক্ষার্থীদের যাতে ঘরের বাইরে না আসতে হয়, ঘরে বসেই ফরম পূরণের কাজ সম্পন্ন করতে পারে ও একই পদ্ধতিতেই ফি সমূহ ব্যাংকে প্রেরণ করতে পারে সে জন্য বোর্ড কর্তৃপক্ষ এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। শিক্ষা বোর্ডের ফরম পূরণের কার্যক্রম বিগত কয়েক বছর ধরে অনলাইনে চললেও পরীক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে গিয়ে ফরম পূরণ করতে হতো। শিক্ষকদের কাছে টাকা জমা দিতে হতো। টাকার পরিমাণ নিয়ে অনেক অভিযোগও ছিল বিভিন্ন মহলে। আবার একদিনের ফরম পূরণের জন্য যেতে হতো কয়েকবার। কিন্তু এ বছরের এসএসসি ফরম পূরণ করতে শিক্ষার্থীদের আর বিদ্যালয়ে আসতে হবে না। করোনাকালীন সময়ে বিদ্যালয়ে এসে জনসমাগম করতে হবে না, আর অপেক্ষা করতে হবে না শিক্ষকদের জন্য। আবার মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে ফরম পূরণের টাকা পরিশোধ করায় অতিরিক্ত টাকা আদায়ের সুযোগও নেই। ইতোমধ্যে গত ০৫/০৪/২০২১ ইং তারিখের বিজ্ঞপ্তি নং-মাধ্য/পনি/৬৩/৩৮ নং স্মারকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র স্বাক্ষরিত এ বিষয়ে একটি নোটিশ/ বিজ্ঞপ্তি শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে। ফরম পূরণের এ বিজ্ঞাপনে কিভাবে একজন শিক্ষার্থী বাড়িতে বসে ফরম পূরণ করবে , কিভাবে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিদ্যালয়ের সোনালী ব্যাংক হিসাবে টাকা জমা দেবার লিংক পাবে এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রাপ্তি, সোনালী সেবা ও পরীক্ষার্থী সিলেকশনের বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। এভাবেই শিক্ষা বোর্ডের সফটওয়ার ডেভেলপ করা হয়েছে। আর এধরনের অত্যাধুনিক সুবিধার কারণে এসএসসি’২১ -এর ফরম পূরণ পদ্ধতি বর্তমান সময়ে সর্বমহলে আলোচনা ও প্রশংসিত হচ্ছে।
বাগেরহাট সদর উপজেলার মধুদিয়া ইচ্ছাময়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২০২১ সালের একজন পরীক্ষার্থীর অভিভাবক মো: আতিয়ার শেখ এ প্রতিনিধিকে জানান.“ বাড়ি বসে পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণের বিষয়টি একটি নতুন অভিজ্ঞতা। এই করোনাকালীন সময়ে বার বার স্কুলে না গিয়ে বাড়িতে বসেই ফরম পূরণের সুযোগ এবং মেসেজের মাধ্যমে পাওনাদি অবহিত করায় স্বচ্ছতা এসেছে। এ কারণে তিনি যশোর শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।”
স্বাশিপের বিভাগীয় সমন্বয়কারী বঙ্গবাসী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: দেলোয়ার হোসেন এবং বাগেরহাট সদর উপজেলার চুলকাটি ঘনশ্যামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল কুমার বিশ্বাস জানান, “ আমরা যশোর শিক্ষা বোর্ড নিয়ে সব সময় গর্ববোধ করি। বোর্ডের সকল কার্যক্রম অন্যান্য বোর্ড থেকে ভিন্ন ও আধুনিক। প্রশ্ন ব্যাংক সহ বোর্ডের ই-ম্যানেজমেন্ট এর কার্যক্রমে আমরা খুশী। ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে শিক্ষার্থীদের আর স্কুলে এসে ভীড় জমাতে হচ্ছে না। বাড়িতে বসেই ফরম পূরণের সুযোগ পাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে জনসমাগম এড়িয়ে বোর্ড একটি বিশাল বড় কাজ সম্পন্ন করছে। আমরা বোর্ড কর্তৃপক্ষকে এ ধরণের উদ্যোগের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড , যশোর-এর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মাধব চন্দ্র রুদ্র এ প্রতিনিধিকে জানান, “ যশোর শিক্ষা বোর্ড সব সময় সহজ, সময়োপযোগী ও আধুনিক সেবা প্রদানের লক্ষে কাজ করে আসছে। ২০২১ সালের ফরম পূরণ তারই ধারাবাহিকতার অংশ। করোনাকালীন সময়ে এ পদ্ধতিতে পরীক্ষার্থীরা বাড়িতে বসে ফরম পূরণ করতে পারবে এবং সকল পাওনাদি পরিশোধ করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, বোর্ডের সেবা আধুনিকায়নের কারণে আজ কেন্দ্র ও প্রধান পরীক্ষকদের কাছ থেকে উত্তরপত্রের ওএমআর বোর্ডে বহন করে আনতে হচ্ছে না। কেন্দ্র হতেই স্ক্যানিং এর মাধ্যমে বোর্ডে প্রেরণ করতে পারছে এবং সফটওয়ারের মাধ্যমে ডাটাবেজ তৈরি করে রেজাল্ট তৈরি করছে।