শনিবার , ডিসেম্বর ২৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / এলপিজি গ্যাস চুক্তিঃ বাংলাদেশের কি লাভ-ক্ষতি?

এলপিজি গ্যাস চুক্তিঃ বাংলাদেশের কি লাভ-ক্ষতি?

ভারতের হায়দরাবাদ হাউসে গত ০৫ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা-নয়াদিল্লির মধ্য দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে নিজ নিজ দেশের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন। এতে দু’দেশের মধ্যে মোট ৭টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এছাড়াও দু’দেশের নেতারা যে তিনটি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন, তার একটি হচ্ছে ভারতে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস রপ্তানি প্রকল্প। যা মূলত ত্রিপুরায় ব্যবহার হবে। এই চুক্তির পরই একটি গুজব ছড়িয়েছিলো যে, প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেটি যে মিথ্যা অপপ্রচার ছিল, তা ইতোমধ্যেই প্রমাণ হয়েছে। তবে এই রপ্তানি বাংলাদেশের জন্যে কতটা লাভজনক আর ভারত কেনইবা বাংলাদেশ থেকে কিনতে যাচ্ছে এই গ্যাস- তা নিয়েই আজকের আলোচনা। 

যে কারণে বাংলাদেশ থেকে গ্যাস কিনছে ভারতঃ বর্তমানে জ্বালানি হিসেবে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম (এলপি) গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারে এর দামও কমছে। বাড়ছে আমদানি ও চাহিদা পূরণের সক্ষমতা। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত প্রাকৃতিক গ্যাসে স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। বিশেষ করে সড়ক যোগাযোগের কারণে ভারতের সেভেন সিস্টার্স নামে খ্যাত অঙ্গরাজ্যগুলোতে জ্বালানি পৌঁছে দেওয়া খুব দুর্বোধ্য। আর ভারতের জন্যে এই সমস্যার সহজ সমাধান হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করা। ভারত থেকে ত্রিপুরায় এলপিজি গ্যাস পাঠাতে ১৮০০ কি.মি. দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হয়, যেখানে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে পাড়ি দিতে হবে কেবল ২০০ কি.মি.। সেকারণেই এই বাণিজ্যে আগ্রহী ভারত।

এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশের কি ক্ষতি হলোঃ এই চুক্তির ফলে বাংলাদেশ কোন ভাবেই ক্ষতির সম্মুখীন হয়নি। বর্তমানে বাংলাদেশ ১০ লক্ষ মেট্রিক টন এলপিজি গ্যাস আমদানি করে থাকে। কিন্তু দেশের বাজারে চাহিদা আছে ৭ লক্ষ মেট্রিক টন। অর্থাৎ অতিরিক্ত ৩ লক্ষ মেট্রিক টন গ্যাস ভারতে রপ্তানি করতে পারবে বাংলাদেশ। যদিও বর্তমান চুক্তিতে কেবল ১৫ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি গ্যাস ত্রিপুরায় রপ্তানি করা হবে। এর ফলে ত্রিপুরায় গ্যাস সরবরাহে যেমন খরচ কমবে ভারতের, তেমনি গ্যাস রপ্তানি করে লাভবান হবে বাংলাদেশ। কাজেই এই চুক্তিতে বাংলাদেশের কোন ক্ষতি নেই।

এই চুক্তিতে কি পেলো বাংলাদেশঃ এই চুক্তিতে পুরো প্রাপ্তিই বাংলাদেশের। প্রথমত ভারতে সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে আরক ধাপ এগিয়ে গেলো বাংলাদেশ। এই চুক্তির ফলে ত্রিপুরা রাজ্য, আসামসহ সেভেন সিস্টার্স রাজ্যসমূহের সাথে বাংলাদেশ সরকারের বন্ধুপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী হলো। অপরদিকে এই রপ্তানির ফলে দেশ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করবে। এ থেকে কি পাবে বাংলাদেশ এমন এমন প্রশ্নে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর নসরুল হামিদ বলেন, “দুই দেশের সরকারের মধ্যে চুক্তি হলেও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে এলপিজি এনে তা পাঠাবে ত্রিপুরায়। এর ফলে আমরা ট্যাক্স, টোল পাব।” এছাড়াও আমদানি বৃদ্ধির ফলে, গ্যাস প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ, পরিবহণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনবল প্রয়োজন হবে, ফলে দেশে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি গুজবঃ মূলত বিবিসি বাংলায় প্রচারিত এক সংবাদের ফলেই এই গুজবটি সৃষ্টি হয়। “ভারতকে প্রাকৃতিক গ্যাস দিচ্ছে বাংলাদেশ ” শিরনামের সংবাদটি পরবর্তীতে মুছে ফেলে বিবিসি, প্রচার করে সংশোধিত সংবাদ “প্রাকৃতিক গ্যাস নয়, বাংলাদেশ থেকে এলপিজি যাবে ভারতে”। এ ব্যাপারে বিবিসি দুঃখ প্রকাশ করে। জানা যায়, এলপিজি গ্যাস মূলত গড়ে উঠেছে আমাদের ভূগর্ভস্থ মজুদকৃত গ্যাসকে কেন্দ্র করে নয়, আমদানিকৃত এলপিজির উপর ভিত্তি করে। বর্তমানে দেশের ২৬টি প্রতিষ্ঠান দেশের বাইরে থেকে যে পরিমাণ এলপিজি গ্যাস আমদানির সাথে সম্পৃক্ত। অথাৎ আমদানি কৃত গ্যাস প্রক্রিয়াজাত করে পুনরায় রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। এতে দেশের প্রাকৃতিক গ্যাসের কোন প্রকার বিনাশ হচ্ছে না।

আরও দেখুন

বড়াইগ্রামে জামায়াতের ব্যাবসায়ী সমাবেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক বড়াইগ্রাম,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,, নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া উপজেলা মডেল মসজিদ হল রুমে শুক্রবার বাদ জুম্মা জামায়াতে …