নিউজ ডেস্ক:
২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা দুই বছর পিছিয়ে গেছে। ফলে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের পুরো মর্যাদা পাবে। এ সময় বাংলাদেশকে তা অর্জনের জন্য নানা প্রস্তুতি নিতে হবে।
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে মসৃণ উত্তরণ নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার।
সেই লক্ষ্যে চলমান প্রক্রিয়াকে আরও বেগবান ও প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে অলোচনা করে একটি ‘কার্যকর প্লাটফর্ম’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বুধবার ‘এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং মসৃণ উন্নয়নের পেথে টেকসই রূপান্তর’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস এতে সভাপতিত্ব করেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি), জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউএনওএইচআরএলএলএস এবং জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) যৌথভাবে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।
বুধবার রাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিতকরণ এবং একটি মসৃন ও টেকসই উত্তরণ নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ হতে যে ধরনের সহায়তার প্রয়োজন হবে তা চিহ্নিত করতে সভাটির আয়োজন করা হয়।
এ সভায়, সিডিপি উত্তরণরত দেশগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও অন্যান্য প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ডে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবে বলে জানানো হয়।
স্বল্পোন্নত দেশে তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটে উন্নয়নশীল দেশের কাতারভুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ।
চলতি বছরের ২৬ ফেব্রয়ারি জাতিসংঘের সিডিপির ত্রিবার্ষিক পর্যলোচান সভায় মূল্যায়ন শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
এর মধ্য দিয়ে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করল বাংলাদেশ। পদার্পন করল নতুন যুগে।
২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে তা দুই বছর পিছিয়ে গেছে। ফলে ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের পুরো মর্যাদা পাবে। এ সময় বাংলাদেশকে তা অর্জনের জন্য নানা প্রস্তুতি নিতে হবে।
ইআরডির কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রস্তুতি পর্বে বাংলাদেশকে এলডিসি দেশ হতে উত্তরণ সংক্রান্ত ইন্টার এজেন্সি টাস্কফোর্স (আইএটিএফ)-এর সদস্যদের কারিগরি সহায়তায় একটি ‘মসৃন কৌশলপত্র’ প্রস্তুত করার তাগিদ দেয়া হয়েছে।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি বিষয়ক) জুয়েনা আজিজ, ইউ এনও এইচ আরএলএলএস এর পরিচালক এবং স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণে সহায়তা সংক্রান্ত জাতিসংঘের ইন্টার এজেন্সি টাস্ক ফোর্স (আইএটিএফ)-এর সভাপতি হাইডি শ্রডেরাস-ফক্স এবং জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি-এর সদস্য এবং স্বল্পোন্নত দেশ সংক্রান্ত সাব গ্রুপের সভাপতি টাফেরে টেস্ফাশিউ।
এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। সহ-সভাপতিত্ব করেন সিডিপির সচিব রোলান্ড মোলেরাস।
বৈশ্বিক মহামারীর প্রেক্ষাপটে সিডিপি উক্ত পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশসহ অন্যান্য উত্তরণরত দেশসমূহকে ২০২১ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরব্যাপী প্রস্তুতিমূলক সময় দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সভায় দুইটি কর্ম অধিবেশনে ছিল। প্রথম কর্ম অধিবেশনটির মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রিপারেশন ফর গ্র্যাজুয়েশন অ্যান্ড স্মুথ ট্রানজিশন অ্যান্ড সাপোর্ট’।
কর্ম অধিবেশনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ উত্তরণের চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয় বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
একই অধিবেশনে ই আর ডি সচিব মিজ ফাতিমা ইয়াসমিন
‘প্লানড স্ট্রাটেজি ফর স্মুথ গ্রেজুয়েশন’ বিষয়ে একটি উপস্থাপনা প্রদান করেন।
দ্বিতীয় কর্ম অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল ‘রেজাল্ট অব সার্ভে অন আ্যসিসট্যান্স মের্জাস ফর এলডিসি গ্রেজুয়েশন ইন বাংলাদেশ’।
এই অধিবেশনে কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি- এর সদস্য সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ-সিপিডির সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ‘কন্ট্রিবিউশন টু দ্য ফিফথ ইউএন কনফারেন্সে অন এলডিসি অ্যান্ড গ্লোবাল সাপোর্ট মের্জাস’ বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক শামসুল আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের সদস্য মিজ শরিফা খান, এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ইয়ামিন চৌধুরীও সভায় বক্তব্য রাখেন।