নিউজ ডেস্ক:
অগ্নিনির্বাপণব্যবস্থায় আধুনিক সরঞ্জামে বদলে যাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এর যান্ত্রিক বহরে নতুন যুক্ত হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মই টার্নটেবল লেডার, রিমোট নিয়ন্ত্রিত অগ্নিনির্বাপণ গাড়ি (রিমোট কন্ট্রোল ফায়ারফাইটিং ভেহিক্যাল) এবং ড্রোন।
গতকাল রবিবার নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন।
মহাপরিচালক জানান, অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ, আধুনিক বাংলাদেশের বর্ধিত সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে প্রশিক্ষণব্যবস্থাকে আধুনিক করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বর্ধিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ফায়ার সার্ভিসের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার ডিজি বলেন, ২০০৯ সালে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের জনবল ছিল মাত্র ছয় হাজার, এখন হয়েছে ১৪ হাজার ৪৬৮ জন; ফায়ার স্টেশন ছিল ২০৪টি, এখন ৪৯৫টি; আগুন নেভানোর গাড়ি ছিল ২২৭টি, এখন ৫৫৮টি; ফায়ারফাইটিং পাম্প ছিল ৪৫০টি, এখন এক হাজার ৫৪৬টি; অ্যাম্বুল্যান্স ছিল ৫০টি, এখন ১৯২টি; বিশেষায়িত গাড়ি ছিল পাঁচটি, এখন ৮৮টি। এ ছাড়া অগ্নিনির্বাপণের ক্যাপাসিটি ২৪ তলা পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে।
ভবিষ্যতে ফায়ার সার্ভিসের জনবল কাঠামো ৩০ হাজারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশে ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা ৭৩৫টিতে উন্নীত করা হবে। নিয়মিত বিরতিতে নতুন নতুন স্টেশন চালু হওয়ায় প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত মানুষের কাছে ফায়ার সার্ভিসের সেবার দরজা সম্প্রসারিত হচ্ছে।
আজীবন রেশন সুবিধা
অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, ফায়ার সার্ভিসের সাফল্যের এই ধারায় সব শেষ সংযুক্ত হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন আজীবন রেশন সুবিধা। গত ১ জুলাই (২০২৩) থেকে অবসরে যাওয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের সঙ্গে যুক্ত সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এই আজীবন রেশন সুবিধা পাবেন। গত ১৩ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শামীম বানু শান্তি স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিলে মন্ত্রণালয় তাতে সম্মতি দেয়।
রেশন হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রতি মাসে ২০ কেজি চাল (সিদ্ধ/আতপ), ২০ কেজি আটা, দুই কেজি চিনি, সাড়ে চার লিটার ভোজ্য তেল ও দুই কেজি ডাল পাবেন।
জানতে চাইলে ডিজি বলেন, বর্তমান সরকারের সময় মুন্সীগঞ্জে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফায়ার একাডেমি’ স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। একাডেমিটি স্থাপনের কাজ সম্পন্ন হলে সেখানে বিশ্বমানের অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজের প্রশিক্ষণ সুবিধা সৃষ্টি হবে।
জানা গেছে, মো. মাইন উদ্দিন মহাপরিচালক হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের ধারা বেগবান হয়েছে। অপারেশনাল কাজের সক্ষমতা বেড়েছে।
রাষ্ট্রের বেসামরিক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৩’ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।