নিউজ ডেস্ক:
বিদ্যুৎ খাতে গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগসহ সব কাজ একই ভবন থেকে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এজন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে চীনের সহযোগিতায় ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) রাজধানীর হাতিরপুলে ১৫ তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছে। অন্য বিতরণ কোম্পানিগুলোও কাজ শুরু করবে।
বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, একই ছাদের নিচে গ্রাহকদের সব সেবা দেয়ার জন্য সব বিতরণ কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এতে গ্রাহকসেবার মান বাড়ার পাশাপাশি কোম্পানিগুলোর আয়ও বাড়বে। কমবে গ্রাহক দুর্ভাগ। এজন্য কোম্পানিগুলো কাজ শুরু করেছে। তবে অবকাঠামোগত সুবিধা না থাকায়, তা এখনই পুরোপুরি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এজন্য একাধিক প্রকল্প নেয়া হয়েছে। বিতরণ কোম্পানিগুলোর যেসব স্থানে অবকাঠামো উন্নয়নের সুবিধা আছে, সেসব জায়গায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ডিপিডিসি এরই মধ্যেই ব্যবস্থা নিয়েছে। রাজধানীর হাতিরপুল এলাকায় ১৫তলা ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।
বিদ্যুৎ জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলোয় গ্রাহকদের একই স্থানে সব ধরনের সেবা দেয়ার সুবিধা দিতে আমরা নির্দেশ দিয়েছি। এর ফলে বিদ্যুৎ-সংক্রান্ত তথ্য দেয়া, গ্রাহকদের নতুন সংযোগ, সংযোগের পর অন্যান্য সেবা, বিল দেয়া, বিলে কোনো সমস্যা থাকলে তা সমাধানে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়গুলো একই জায়গায় করা গেলে গ্রাহক হয়রানি কমবে। এরই মধ্যেই গত ১৯ জুন ডিপিডিসির উদ্যোগে রাজধানীর পরিবাগ এলাকার হাতিরপুল পাওয়ার হাউজ ক্যাম্পাসে ভবন নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যেই নির্মাণকাজ শেষ হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, চীনের সহযোগিতায় ডিপিডিসি এলাকায় গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার সুবিধা তৈরি এবং বিদ্যুৎ বিতরণ সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘এক্সপানশন এন্ড স্ট্রেংদেনিং অব পাওয়ার সিস্টেম নেটওয়ার্ক আন্ডার ডিপিডিসি এরিয়া’ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। চীনের টিবিইএ কোম্পানি লিমিটেডকে ঠিকাদার নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী হাতিরপুল পাওয়ার হাউজ ক্যাম্পাসে ‘ধানমন্ডি টুইন টাওয়ার’ ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। ভবনের নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ৭ দশমিক ৩২ একর জমির ওপর নির্মিত এই টাওয়ারের ৫০ ভাগ ভূমি উন্মুক্ত থাকবে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ ভবন থেকে গ্রাহকদের সেবা দেয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি এ ভবনের বাণিজ্যিক স্পেস ভাড়া দিয়ে ডিপিডিসির আয় আরো বাড়বে। এ ভবনে বিদ্যুৎবিষয়ক একটি জাদুঘরও থাকবে। এই জাদুঘর নতুন প্রজন্মকে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ও বিদ্যুতায়নের
ধাপে ধাপে রূপান্তরের বিষয়ে ধারণা দেবে।
জানা গেছে, এ প্রকল্পের আওতায় ১৪টি ১৩২/৩৩ কেভি সাবস্টেশন, ২৬টি ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন, স্কেডা অটোমেশন সিস্টেম, আধুনিক ম্যাকানাইজড ওয়ারহাউজ, ভূগর্ভস্থ তার ১৩২ কেভি ৬৫৩ কিলোমিটার ও ৩৩ কেভি ৭০০ কিলোমিটার, বিতরণ লাইন (ক) ১১ কেভি ৫৬৭ কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ, (খ) ১১ কেভি ২ হাজার ৫১৫ কিলোমিটার ওভারহেড, (গ) শূন্য দশমিক ৪ কেভি ২ হাজার কিলোমিটার ওভারহেড, ধানমন্ডিতে ১০৫ কিলোমিটার ওভারহেড তার ভূগর্ভস্থ করা এবং আধুনিক সাবস্টেশন কাম অফিস/বাণিজ্যিক/আবাসিক হাইরাইজ ভবন নির্মাণ করা হবে।
ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান জানান, ভবনটি নির্মাণ শেষে এক ছাদের নিচ থেকেই গ্রাহকরা সব সেবা পাবেন। তাদেরকে এক অফিস থেকে অন্য অফিসে ঘুরতে হবে না। একবার এসেই সব সেবা অল্প সময়ের মধ্যেই পাবেন। এতে একদিকে সময় সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে হয়রানিও হতে হবে না।