করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশে সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব ও উত্তরণের কর্মপরিকল্পনা জানাতে রোববার গণভবনে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশে সংক্রমণ ও মৃত্যুর সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি মৃত্যুও আমাদের কাম্য নয়।”
তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সময়মত ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। যার ফলে আল্লাহর রহমতে এখনও আমাদের এখানে ব্যাপক সংক্রমণ ঘটেনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।”
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা যে ইতোমধ্যে নেভেল করোনাভাইরাসজনিত রোগ কোভিড-১৯কে বৈশ্বিক মহামারী ঘোষণা করেছে, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, এ যাবৎ ২০২টি দেশ ও অঞ্চলে এর সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশ্বে এখন প্রতিদিন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে এবং ৪ হাজারের বেশি মারা যাচ্ছে।
“এইটুকুই আশার বাণী যে সুস্থতার লক্ষণ খুব বেশি।… কাজেই এখানে খুব বেশি একটা ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তবে আমি মনে করি সকলেই যদি যথাযথভাবে স্বাস্থ্যসম্মত নির্দেশনা মেনে চলে, তাহলে খুব দ্রুত সুস্থতা লাভ করা যেতে পারে।”
গত বছর ডিসেম্বরে চীনে
করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পরপরই সরকার বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত
গুরুত্বের’ সঙ্গে নিয়েছিল মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা ও আইইডিসিআর তখনই যৌথভাবে কাজ শুরু করে।
আইইডিসিআরের কন্ট্রোল রুম খোলা হয় এবং রোগটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি শুরু করা
হয়।
এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আলাদা
কন্ট্রোল রুম চালু করে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং কার্যক্রম
পরিচালনা শুরু হয বলে জানান সরকারপ্রধান।
সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের
পূর্ব অভিজ্ঞতা এবং বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে সরকার
‘ন্যাশনাল প্রিপার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্ল্যান ফর কভিড-১৯’ প্রণয়ন করেছে
জানিয়ে তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার আওতায় ‘তিন-স্তর বিশিষ্ট’ কার্যক্রম গ্রহণ
করা হয়েছে।
“বিদেশ হতে আগত ব্যক্তিদের মাধ্যমে যেন ভাইরাস না ছড়ায় সেজন্য বিদেশে গমন এবং বিদেশ থেকে আগমন নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশের মধ্যে ভাইরাস সংক্রমিত ব্যক্তির আগমন ঘটলে দ্রুত সনাক্তকরণ এবং এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ভাইরাসের বিস্তার যাতে না ঘটে তার ব্যবস্থা নিচ্ছি, চিহ্নিত আক্রান্ত ও অসুস্থ ব্যক্তিদের দ্রুত পৃথক করে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।”
গত জানুয়ারি থেকেই এ ব্যবস্থায় কার্যক্রম চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দেশের সকল বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর এবং স্থলবন্দরে বিদেশ প্রত্যাগত যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানার ও ইনফ্রারেড থার্মোমিটারের মাধ্যমে স্ক্রিনিং করা হয়। লক্ষণযুক্ত এবং সন্দেহভাজন যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।