নিউজ ডেস্কঃ
করোনা ভাইরাসের কারণে এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা স্থগিত হয়ে আছে। ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমাতে চলছে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি। তবে এ ছুটি শেষ হয়ে পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে-তা কেউ-ই জানেন না। ফলে চিন্তা আর উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন লাখো শিক্ষার্থী।
জানা যায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয় গত ২২ মার্চ। এ সময় এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে এ পরীক্ষার পরবর্তী সময়সূচি জানানোর কথা বলা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় তা এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি। এদিকে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি বেড়েছে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও কার্যকর হবে।
এ অবস্থায় পরীক্ষার প্রস্তুতিতে বাঁধা পড়া, মানসিক দুশ্চিন্তা, পড়াশোনার ধারাবাহিকতা হারিয়ে ফেলা এবং সর্বোপরি পরীক্ষার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রস্তুতির জন্য যথাযথ সময় পাওয়া যাবে কিনা-সেসব বিষয় ভেবেই উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার ভেতর দিয়ে দিন পার করছেন পরীক্ষার্থীরা। একই অবস্থা অভিভাবদেরও।
এ বিষয়ে কথা হলে পরীক্ষার্থী হালিমাতুস সাদিয়া বলেন, পরীক্ষা পেছানোর ফলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ঠিকমতো পড়তে পারছি না। কোনো সম্ভাব্য তারিখ না দেওয়ার কারণে পরীক্ষা কবে হবে, কেমন হবে- এসব নিয়ে চিন্তা হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছে পড়াশোনার ধারাবাহিকতা হারিয়ে গেছে। কোথায় থেকে কী করব-কিছুই বুঝতে পারছি না।
সব ছন্নছাড়া মনে হচ্ছে। পড়তে বসলে সবার আগে মাথায় আসে পরীক্ষা কবে হবে! তিনি বলেন, আবার অ্যাডমিশন নিয়েও চিন্তা হয়। পরীক্ষার পর অ্যাডমিশনের প্রস্তুতির জন্য যথাযথ সময় না পেলে খুবই সমস্যা হবে। কীসের প্রিপারেশন নেব, তা অনেকটাই পরীক্ষার ফলের ওপর নির্ভর করে। পরীক্ষা পেছানোয় মাথায় এখন পরীক্ষা ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রস্তুতি নিয়ে দুইরকম চাপ কাজ করছে। সব মিলিয়ে খুবই বাজে একটা অবস্থা।
আরেক পরীক্ষার্থী আতাউর রহমান বলেন, পরীক্ষার জন্য বেশ গোছানো একটা প্রস্তুতি ছিল। এখন সেটা আর নেই, কেমন যেন হয়ে গেছে।
সবচেয়ে বড় টেনশন বর্তমান পরিস্থিতিতে সব সময় আবদ্ধ হয়ে থাকায় পড়াশোনা ঠিকমতো করতে পারছি না। এর মধ্যে কখন কীভাবে হুট করে পরীক্ষার ডেট হয়ে যাবে; তাই খুব বিব্রত অবস্থায় আছি। পরীক্ষার আগে যদিও মনে হচ্ছিল পরীক্ষা পিছিয়ে গেলে আরও ভালো করে প্রস্তুতি নিতে পারব। কিন্তু পেছানোর পর থেকে পড়ার তাল হারিয়ে গেছে।
এদিকে প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখায় শিক্ষাপঞ্জিও হয়ে গেছে এলোমেলো। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির বিষয়টিও মাথায় রাখছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
গত রোববার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গণমাধম্যকে জানিয়েছিলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়লেও এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটিও ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে স্থগিত থাকা এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নিয়ে এখনই কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরকার এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বৈঠকের মাধ্যমেই এইচএসসি পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।