নিউজ ডেস্ক:
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আজ ভোর রাতে ভারতের উত্তর ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ থেকে দেশের পটুয়াখালী-বাঘেরহাট ও খুলনাসহ ৩১ জেলায় বঙ্গোপসাগর পৌঁছাতে পারে এবং আঘাত হানতে পারে। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। এ জন্য ১৪ হাজার ৭০০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩০ লাখ ৭৮ হাজারবেশি মানুষকে রাখা প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে, সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার, সুপেয় পানি, মেডিকেল টিম শুখনো খাবার, শ্যালাইন, বিদ্যুৎ অথবা বিকল্প ব্যবস্থায় আলোর ব্যবস্থা করা রাখা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা গুলোতে শুরু মাইকিং।
করোনা সংক্রমণের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় এবারও স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃত্যু শূন্যের কোঠায় রাখতে শতভাগ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়ার প্রস্তুতি নিতে ডিসিদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় পানি সম্পাদ মন্ত্রণালয় নৌ- পরিবহন মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মনিটরিং সেল গঠন করেছে। এসব মন্ত্রণালয় কি কি কাজ করছে তা দেখ ভাল করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) আহমদ কায়কাউস নিজেই জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন বলে জানা গেছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় পাঁচ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করা হয়েছিল। আম্ফানের সময় করোনার কারণে ১৪ হাজার ৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩০ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে রাখা হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারও তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের জেলাগু লোতে ৪ হাজার ৯৯৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ঝুঁকিপ্রবণ এলাকার ২০ লাখ লোককে যাতে তাৎক্ষণিক নিরাপদে সরিয়ে আনা যায়, সে লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে যাতে স্বাস্থ্যবিধির লঙ্ঘন না হয়, সেদিকেও খেয়াল রেখে বিশেষ ব্যবস্থাপনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বিভাগীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় বিভাগের ছয় জেলার জেলা প্রশাসকদের এসব নির্দেশনা দিয়েছেন।
সভায় বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান বলেন, দক্ষিণ উপকূল দুর্যোগপ্রবণ হওয়ায়, বিশেষ করে বিভাগের বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলা, এই তিন জেলায় অনেক বহুতল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঝুঁকিপ্রবণ এলাকাগুলো থেকে যাতে তাৎক্ষণিক ২০ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনতে পারি, সে জন্য প্রায় ৫ হাজার আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ অথবা বিকল্প ব্যবস্থায় আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দুর্যোগের সময় জরুরি মুহূর্তে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা দুরূহ হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অন্তত যাতে প্রতিটি পরিবারের সদস্য এক জায়গায় থাকতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানার আশঙ্কায় সাতক্ষীরার উপকূল এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদগুলোর পক্ষ থেকে লাল পতাকা উড়িয়ে ঝড়ের সতর্কবার্তা জানানো হয়েছে।
গতকাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ মোকাবিলায় সরকারের সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। এর আগে ১৪ হাজার ৭০০টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২৪ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি মানুষকে রাখা হয়েছিল। এবার ৩০ লাখ মানুষের বেশি রাখার মতো আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অতীত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারও তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কোভিডের কারণে তিনগুণ আশ্রয়কেন্দ্র স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবহার, সবার জন্য মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিশ্চিত করা হয়েছে। ফণী, বুলবুল, আম্ফান মোকাবিলায় অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করা হবে। কোভিড রোগী থাকলে তাকে আইসোলেশনে রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আক্রান্ত কেউ যেন সুস্থ মানুষের মধ্যে না আসতে পারে, সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কোনোভাবেই যেন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে নতুন করে সংক্রমণের সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়টি নিয়ে আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
যশোর জেলা ডিসি মো. তমিজুল ইসলাম খান ইনকিলাবকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানার আশস্কায় জেলায় সকল উপজেলার সাধান মানুষের জন্য ১৫০০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সাতক্ষীরা জেলার ডিসি এস এম মোস্তাফা কামাল বলেন. ১৫০০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার, সুপেয় পানি, বিদ্যুৎ অথবা বিকল্প ব্যবস্থায় আলোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা দুরূহ হওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে অন্তত যাতে প্রতিটি পরিবারের সদস্য এক জায়গায় থাকতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ইয়াস আঘাত হানার আশঙ্কায় সাতক্ষীরার উপকূল এলাকায় মাইকিং করে সতর্ক করা হচ্ছে।
রাঘেরহাট জেলার ডিসি মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, এ জেলায় ৯৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তু রাখা হয়েছে। ্এ খানে স্বাস্থ্যসম্মত শৌচাগার, সুপেয় পানি, মেডিকেল টিম শুখনো খাবার, শ্যালাইন, বিদ্যুৎ অথবা বিকল্প ব্যবস্থায় আলোর ব্যবস্থা করা রাখা হয়েছে।