সোমবার , নভেম্বর ১৮ ২০২৪
নীড় পাতা / জাতীয় / উদ্বোধন করলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ সরবরাহ: আনন্দে ভাসছেন দুর্গম চরাঞ্চলের বাসিন্দারা

উদ্বোধন করলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী সাবমেরিন ক্যাবলে বিদ্যুৎ সরবরাহ: আনন্দে ভাসছেন দুর্গম চরাঞ্চলের বাসিন্দারা

শরীয়তপুর জেলার দুর্গম চরাঞ্চলে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাচ্ছে পদ্মা নদীবেষ্টিত নওপাড়া, চরআত্রা ও কাঁচিকাটা ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার পরিবার। আজ শনিবার দুপুর একটার দিকে (১৫ ফেব্রুয়ারি) নড়িয়ার চরাত্রা ও নওপাড়ায় এ বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ একেএম এনামুল হক শামীম।

স্থানিয় সূত্রে জানা গেছে, ওই চরের নওপাড়া ও চরআত্রা ইউনিয়ন পড়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায়। আর কাঁচিকাটা ইউনিয়ন ভেদরগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত। এ তিনটি ইউনিয়নে প্রায় ৭২ হাজার মানুষের বসবাস। গত সংসদ নিবার্চনে একেএম এনামুল হক শামীম ওই চরগুলোতে নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার দাবি তোলেন স্থানীয়রা। নির্বাচিত হতে পারলে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হবে এমন প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি। পরে সংসদ নির্বাচনের পর এনামুল হক শামীম ওই তিন ইউনিয়নে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ার বিষয়ে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে সভা করেন। এ সময় সিদ্ধান্ত হয়, মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি থেকে ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হবে। পরে শরীয়তপুর ও মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সঙ্গে এনামুল হক শামীম সভা করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয় সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে নদী দিয়ে বিদ্যুতের লাইন নেয়া হবে। পরে শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ওই তিনটি ইউনিয়নের কার্যক্রম মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে হস্তান্তর করা হয়। সে অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়। ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড থেকে এ বিষয়ে প্রশাসনিক অনুমোদন দেয়া হয়। অনুমোদনের ভিত্তিতে কাজ শুরু করে মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। সাবমেরিন ক্যাবলের কাজ শেষ হয়। আজ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) নড়িয়ার চরাত্রা ও নওপাড়ায় সামেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ উদ্বোধন করা হয়েছে। নওপাড়া, চরআত্রা ও কাঁচিকাটা ইউনিয়নের পরিবারগুলো পাছে বিদুৎ ।
 
তাই তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৭২ হাজার মানুষ আনন্দে ভাসছে। তবে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে সোলার ইলেক্ট্রো বাংলাদেশ লিমিটেড ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে সোলার মিনিগ্রিড এর মাধ্যমে কাচিকাটা ও ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে আরেকটি সোলার মিনিগ্রিড এর মাধ্যমে ১৪ শত পরিবারের বিদ্যুতের বাতি জ্বালানো হয়। 

চরআত্রা ইউনিয়নের বাসিন্দা কবির হোসেন, সোহেল মিয়া, সিপন জানান, চারদিক দিয়ে পদ্মা ও মেঘনা নদী। মাঝে ছোট-বড় অসংখ্য চর। ৭০ বছর আগে থেকে ওই চরে মানুষ বসবাস শুরু করেছে। তিনটি ইউনিয়নের মধ্যে চরগুলোর অবস্থান। চরের মানুষ হারিকেন ও প্রদীপের আলো ছাড়া কখনো বিদ্যুতের আলো পায়নি। কিন্তু এবার পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সেই চরে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে । আগামী শনিবার বিদ্যুতের আলো পাবে তারা।

নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ আজগর সোহেল মুন্সী বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি দুর্গম চর। পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে এখানে বিদ্যুৎ দেয়া হবে তা কখনো ভাবিনি। এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে এমন খবরে আমরা আনন্দিত।

চরআত্রা ইউনিয়ন বাসিন্দা ডাক্তার তৌহীদ মুন্সী  বলেন, আমাদের ইউনিয়নটি পদ্মা নদীর মাঝে হওয়াতে কল্পনা করতে পারিনি বিদুৎ দেখতে পাবো। আমার এলাকার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ সরকারকে অভিনন্দন । প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন পনি সম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীমকে  এলাকাবাসী ও ডাক্তারদের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।

শরীয়তপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক জুলফিকার রহমান বলেন, পদ্মা নদীর তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে শরীয়তপুরের তিনটি চরে বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। চর তিনটি আমাদের এরিয়ায় পড়েছে। তবে মুন্সিগঞ্জ জেলা কাছে এবং সুবিধা বেশি হওয়ায় ওই জেলে থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাচ্ছে তারা। ওই চরে একটি সাবস্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। 

মুন্সিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক এএইচএম মোবারক উল্লাহ বলেন, মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার ছিপাইপাড়া থেকে  শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার নওপাড়ার দূরত্ব প্রায় ২৪ কিলোমিটার। আর নওপাড়া ইউনিয়নে পল্লী বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র হচ্ছে।

তিনি বলেন, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে তিনটি ইউনিয়নে (৩৩কেবি) বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। যা ২০ হাজার পরিবার ভোগ করতে পারবেন। শনিবার আপাতত এক হাজার পরিবারকে বিদ্যুতের সংযোগ দেয়া হচ্ছে।

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও শরীয়তপুর-২ আসনের সাংসদ একেএম এনামুল হক শামীম বলেন, প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নে কাজ করছি। পদ্মা-মেঘনার মাঝে অবস্থিত কাচিকাটা, চারআত্রা ও নওপাড়া মানুষ বিদ্যুৎ পাবে ভাবতেও অবাগ লাগে। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী বলেই সম্ভব হয়েছে এ দুর্গম চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছানো। 

উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুজিববষের্র বিশেষ উপহার হিসেবে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দুর্গম চরের মানুষকে বিদ্যুৎ দিচ্ছেন। তাছাড়া পদ্মা বহুমুখী সেতুও এখন দৃশ্যমান। 

আরও দেখুন

পিরোজপুরে মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে দিনব্যাপীপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক:  ১৩ জুলাই ২০২৪, শনিবার, ঢাকা: মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী কার্যে অর্থায়ন প্রতিরোধ বিষয়ে পিরোজপুরের …