‘দীর্ঘ সময় দেশ শাসনের ক্ষমতায় থাকা’ বিশ্বের নারী নেত্রীদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পেছনে ফেলেছেন ভারতের ইন্দিরা গান্ধী, ব্রিটেনের মার্গারেট থ্যাচার ও শ্রীলঙ্কার চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গার মত বিশ্বখ্যাত নারী নেত্রীদের। আন্তর্জাতিক সংস্থা উইকিলিকসের জরিপের এইসব তথ্য উঠে এসেছে। সেসব তথ্য নিয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর, সোমবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম ইউনাইটেড নিউজ অব ইন্ডিয়া (ইউএনআই)। উইকিলিকসের জরিপে বলা হয়েছে, ‘শেখ হাসিনা এখন নারীদের পুনর্জাগরণের প্রতীক।’
শেখ হাসিনা টানা তৃতীয়বারসহ মোট চতুর্থবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এখন দায়িত্ব পালন করছেন। প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি শাসন করেন ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত। মাঝখানে এক মেয়াদ বিরতি দিয়ে ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় আসে তার দল। এরপর থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবেই ক্ষমতায় আছেন তিনি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তার দল আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা।
ইতোমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ১৫ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। চতুর্থ মেয়াদের এক বছর পার না হলেও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের রেকর্ডকে অতিক্রম করা একমাত্র নারী নেত্রী শেখ হাসিনা। নারী শাসকগণের মধ্যে মাত্র চারজন শাসকই বিশ্ব রাজনীতিতে নিজেদের নাম ফুটিয়ে তুলতে পেরেছেন। তারা হলেন- ইন্দিরা গান্ধী, মার্গারেট থ্যাচার, অ্যাঞ্জেলা মার্কেল ও শেখ হাসিনা। তারা সবাই নিজের দেশকে একটি নতুন সম্ভবনার দুয়ারে নিয়ে গেছেন। চতুর্থবার ক্ষমতায় আরোহনের পর শেখ হাসিনা বিশ্বে সুপরিচিত অন্যান্য নারী নেতাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিক্রম করে গেছেন।
গেল কয়েক বছরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সামাজিক-অর্থনৈতিক খাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সফলতা অর্জন করেছে। মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ১৯০০ ডলারে, যা কয়েকবছর আগেও ছিল হাজার ডলারের নিচে। তার আমলে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উপনীত হয়েছে। ২০১৮ সালে মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সফল ভাবে উৎক্ষেপণ করছে। যেটি তার সরকারের আরেকটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ের কারণে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ডিজিটাল প্রযুক্তি পৌঁছে গেছে। ভিশন ২০২১ ও ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা এখন দেশকে উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বর্তমান বিশ্বের জন্য বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নের উদাহরণ হিসেবে সারা বিশ্বের চোখ এখন বাংলাদেশের দিকে।
বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও সেবার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বীকৃতি স্বরূপ অনেক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনাকে বহু পুরস্কারে সম্মানিত করেছে। শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দেশ পরিচালনার নীতি পরিবর্তন করেছে প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবনযাত্রা। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দারিদ্র্য বিমোচনে তাঁর প্রণীত ৬ দফা গৃহীত হয়েছে। সারাবিশ্বে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থা শেখ হাসিনা প্রণীত দারিদ্র্য বিমোচন নীতি অনুসরণ করে যাচ্ছেন।