নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী:
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের ‘খ’ ও ‘গ’ ধারা দুটি বাতিল না করলে অতিরিক্ত দায়িত্ব আর পালন করবেন না বলে আল্টিমেটাম দিয়েছেন রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী নেতৃবৃন্দ। রবিবার (৩০ জানুয়ারী) দুপুর ১২টার দিকে রেলওয়ে রানিং স্টাফ কেন্দ্রীয় ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে এই আল্টিমেটামের কথা জানানো হয়েছে। ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ রবিবার (৩০জানুয়ারী) ১২ টার দিকে দুই নাম্বর প্লার্টফর্মে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃনগর রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেন। মিছিলটি ঈশ্বরদী জংশনের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিন শেষে সমাবেশ অংশ নেন।
সমাবেশে বক্তারা অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর ০৭.০০.০০০০.১৭৩.৪৪.০০৪.১৪.(অংশ-১)-১০৫ স্মারকে জারীকৃত ‘খ’ ও ‘গ’ ধারা বাতিলের দাবী জানিয়েছেন। এসময় রবিবার (৩০ জানুয়ারী) রাত ১২ টার পর থেকে ট্রেন না চালিয়ে কর্মবিরতিতে যাওয়ার কথা বলেছেন পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের লোকোমাষ্টার (চালক) গার্ড এবং টিটিই সদস্যরা।
উল্লেখ্য যে, গত ২৫ জানুয়ারী বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি ঈশ্বরদী শাখার নেতৃবৃন্দ বিক্ষোভ মিছিল শেষে সমাবেশে ঘোষনা করেছিলেন, আগামী ৫ দিনের মধ্যে দাবী মানা না হলে ৩১ জানুয়ারী থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যাবে ট্রেনের চালক, গার্ড ও টিটিইরা। আজ রবিবার রাত ১২টা পর্যন্ত আলটিমেটামের সময় রয়েছে। এরমধ্যে দাবী পূরণ না হলে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় সকল ট্রেনে রানিং স্টাফ না থাকার কারণে ট্রেনের চাকা থেমে যাবে। এতে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের আওতায় থাকা আন্তঃনগর, মেইল, লোকাল ও মালবাহী ট্রেন চলাচলে শিডিউল বিপর্যয় ঘটবে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী সমিতির ঈশ্বরদী শাখার সম্পাদক রবিউল ইসলামের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ পরিচালনা করেন রেলওয়ে রানিং কর্মচারী ঐক্য পরিষদের পাকশী বিভাগীয় কমিটির সমন্বয়ক, রেল শ্রমিকলীগ ঈশ্বরদী শাখার সম্পাদক আসলাম উদ্দিন খাঁন মিলন। বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন, রেল শ্রমিকলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, ঈশ্বরদী শাখার যুগ্ম সম্পাদক,এস এম আহসান উদ্দিন আশা, ঈশ্বরদী রেলওয়ে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরীক (টিটিই) আব্দুল মাবুদ প্রমুখ। এসময় বাংলাদেশ গার্ড কাউন্সিল ঈশ্বরদী রেল শাখার সভাপতি শাহ আলম, সম্পাদক ইকবাল হোসেনসহ পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের খুলনা, রাজশাহী, পার্বতীপুর, রাজশাহী, সান্তাহার এবং ঈশ্বরদী লোকোসেডের রেলওয়ের চালক, গার্ড, টিটিইরা উপস্থিত ছিলেন।
এব্যাপারে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের পরিবহণ কর্মকর্তা (ডিটিও) আনোয়ার হোসেন জানান, রেলওয়ের রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে গেলে ৮ ঘন্টার বেশি অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবে না বলে রানিং স্টাফরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চালক ও গার্ড সংকটের কারণে যাত্রীবাহী ট্রেন, মালবাহী ট্রেনে ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয় ঘটবে। ঊর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অবগত রয়েছেন এবং সমাধানের জন্য চেষ্টাও করছে। আমি বিষয়টি ঊদ্ধতন কর্মকর্তাদের অবগত করেছি।
রানিং স্টাফ কর্মচারী সমিতির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক রবিউল ইসলাম খ ও গ ধারা প্রসংগে জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঐ আদেশের ‘খ’ ধারা দ্বারা আমাদের অবসরত্তোর পেনশন সুবিধা ও আনুতোষিক খর্ব করা হয়েছে। ‘গ’ ধারা দ্বারা আমাদের চলমান অর্জিত মাইলেজ এ প্রাপ্ত অর্থ পুরোপুরি না দেয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে আমরা যতই মাইলেজ অর্জন করি না কেন প্রত্যেকের বেসিক এর বেশী অর্থ আমরা পাব না বলে বলা হয়েছে। ‘খ’ ধারার কারনে বর্তমানে অবসরে যাওয়া রানিং স্টাফদের এখন পর্যন্ত ফাইনাল সেটেলমেন্ট হয়নি। ৬ মাস যাবত পি আর এল শেষ হলেও এখন পর্যন্ত তারা পেনশন পাননি।