নিজস্ব প্রতিবেদক,বড়াইগ্রাম:
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া বাজারে ইসলামী জলসার নামে চাঁদা উঠানোকে কেন্দ্র করে নাজমুল হোসেন নাহিদ (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ীকে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাজারে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আহত নাজমুল হোসেনকে (৪০) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। নাজমুল হাসান নাহিদ উপজেলার বাহিমালী এলাকার সামসুল ইসলামের ছেলে।
এই ঘটনায় রাত আটটার দিকে বনপাড়া পৌর মেয়রের ভাতিজা, মাইদুল কবিরের ছেলে পাপ্পু কবিরাজ (৩৫) ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, উপজেলা কৃষকলীগ সভাপতি ওয়াজেদ আলী সোনারের ছেলে সাকিব সোনারকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
বনপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর স্থাণীয় সূত্রে জানা বলেন, মহিষভাঙ্গা দক্ষিণপাড়ায় একটি ইসলামী জলসা করা হবে মর্মে বনপাড়া বাজারের বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা উঠাতে নামে মহিষভাঙ্গা ও মালিপাড়ার কতিপয় যুবক। এসময় মালিপাড়ার কিছু যুবক প্রতিবাদ করে জানায় সেখানে এধরনে কোন জলসার আয়োজন নাই। বিতরণকৃত পোষ্টার ভ‚য়া। এটা অপর এক যুবক ভিডিও করে চাঁদা উত্তোলনকারীদের ছবিসহ ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। ওই ভিডিও আবার শেয়ার করেন বনপাড়া হীরা মার্কেটের কাপড়র ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান নাহিদ।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মহিষভাঙ্গার শাকিব সোনার, নাজমুল হাসান, পাপ্পু কবিরাজ, রাপ্পু হোসেন দুপুরে নাজমুল হাসান নাহিদকে দোকান থেকে ডেকে নিয়ে মালিপাড়া রোডে হীরা মার্কেটের ২য় তলায় লাঠি ও রড দিয়ে এলোপাথারি ভাবে পিটিয়ে আহত করে। পরে ব্যবস্য়াীরা এগিয়ে এলে তারা সড়ে পরে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দোকান বন্ধ করে নাটোর-পাবনা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদেরকে বিচারের আশ^াস দিলে অবরোধ তুলে নেয়। কয়েক ঘন্টা বন্ধ থাকে নাটোর-পাবনা মহাসড়কের এক পাশের যান চলাচল ও বনপাড়া বাজারের সকল দোকান পাট।
তিনি আরো বলেন, বেলা সারে ১২টার দিকে দোকান পাট বন্ধ করে রাস্তা অবরোধ করে ব্যবসায়ীরা। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বড়াইগ্রাম সার্কেল শরীফ আল রাজীব, বড়াইগ্রাম থানার পুরিদর্শক শফিউল আজম, বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম, ডিবি পুলিশ ও পুলিশের একটি বিশাল টিম ঘটনাস্থলে এসে বিকেল সারে চারটায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। এসময় পুলিশের সাথে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
এসময় ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ সভায় উপজেলা বণিক সমিতির সভাপতি ফজলুর রহমান তারেক, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান গাজী, ব্যবসায়ী হায়দার আলী মুক্তা, সাইফুল ইসলাম অবিলম্বে দোয়ীদের ঘেফতার ও বিচার দাবী করেন।
এসম খবর পেয়ে স্থাণীয় সংসদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটারোয়ারী ঘটনাস্থলে এসে ব্যবসায়ীদের সাথে একাতœতা প্রকাশ করে এসকল ঘটনার জন্য বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেনকে অভিযুক্ত করেন। একই সাথে অবলিম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বলেন, অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে। আর সাংসদ মহোদয় জনশূন্য রাজনৈতিক ব্যক্তি। তাই এই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে সস্তা রাজনীতির চেষ্টা করছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব বলেন, ঘটনার বিষয়ে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। সার্বিক আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।