শুক্রবার , ডিসেম্বর ২৭ ২০২৪
নীড় পাতা / টপ স্টোরিজ / ইসমাইল মাহমুদ এর লেখা ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস : জীবনকে ভালোবাসতে শিখুন’

ইসমাইল মাহমুদ এর লেখা ‘বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস : জীবনকে ভালোবাসতে শিখুন’

ইসমাইল মাহমুদ

আজ বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। ২০০৩ সাল থেকে প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০১৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, নিচু আয়ের কোনো দেশেই আত্মহত্যা প্রতিরোধে কোনো কৌশল বা কর্মপন্থা ঠিক করা হয়নি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৪ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বে আট লাখেরও বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে। সংস্থাটির মতে, প্রতি ৪০ সেকেন্ডে একজন মানুষ আত্মহত্যা করে। এরও প্রায় ১৫ থেকে ২০ গুণ মানুষ আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। আত্মহত্যার প্রবণতা রোধে জনসচেতনতা বাড়াতে আন্তর্জাতিক আত্মহত্যা প্রতিরোধ সংস্থা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যৌথভাবে প্রতি বছর ১০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস পালন করে থাকে।

এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, আমাদের দেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০ জন মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নেয়। এর মধ্যে নারী-পুরুষ-শিশু সব বয়সের মানুষ রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মহত্যা করে ২১ বছর থেকে ৩০ বছরের নারী। এ বয়সী কিছু পুরুষও নানা কারণে আত্মহনন করে। পরিসংখ্যানে আরও দেখা গেছে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ১১ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট মাস পর্যন্ত আট মাসে দেশে আত্মহননের ঘটনা সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। সংখ্যাটি উদ্বেগজনক।

আত্মহত্যার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞদের অভিমত- বৈষম্য, বঞ্চনা, বিভ্রান্তি, হতাশা এবং না পাওয়ার যন্ত্রণার কারণে মানুষ জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা থেকেই আত্মহত্যা করে। যেখানে সমাজের ভারসাম্য কম, অগ্রগতির সুফল সবাই সমানভাবে পায় না এবং বিভক্তি বেশি, সেখানেই আত্মহত্যার প্রবণতাও বেশি। আত্মহত্যা ঠেকাতে সচেতনতার বিকল্প নেই। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। জাগ্রত করতে হবে সুস্থ মানবিক মূল্যবোধ। হতাশাগ্রস্ত মানুষকে তাদের জীবনের প্রতি ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে।

অপরাধ, সমাজ ও মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে সংঘটিত আত্মহত্যার ঘটনাগুলোতে সংশ্লিষ্ট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হলেও জোরালো ও সুষ্ঠু তদন্ত হয় না বললেই চলে। আত্মহত্যার ঘটনার জোরালো ও সুষ্ঠু তদন্ত হলে এসব ঘটনার নেপথ্য কারণ বেরিয়ে আসতে পারে। এতে অপরাধী বা অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সচেতনতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোরালো তৎপরতা থাকলে আত্মহত্যার ঘটনা কমিয়ে আনা সম্ভব।

আত্মহত্যা প্রতিরোধে সবার আগে আত্মহত্যাপ্রবণ লোকদের শনাক্ত করতে হবে। তারপর তাদের আত্মহত্যা থেকে দূরে রাখতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিশেষ করে যারা বিভিন্ন মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত, তাদের স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, কীটনাশক বা বিষ, বিষাক্ত পদার্থ ইত্যাদি দূরে রাখতে হবে। এছাড়া গণমাধ্যমে আত্মহত্যাবিরোধী প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে।

ইসমাইল মাহমুদ : গণমাধ্যমকর্মী [email protected]

আরও দেখুন

বাগাতিপাড়ায় আগুনে পোড়া তিন পরিবার পেল সহায়তা

নিজস্ব প্রতিবেদক বাগাতিপাড়া,,,,,,,,,,,,,নাটোরের বাগাতিপাড়ায় আগুনে পুড়ে যাওয়া ৩টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে …