নিউজ ডেস্ক: তৃণমূলের চাপ উপেক্ষা করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা বিএনপি এবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে কৌশল পাল্টিয়েছে।
জানা গেছে, দলীয় প্রতীকের বাইরে ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। ‘ধানের শীষ’ প্রতীক না নিয়ে দলটির নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার পরামর্শ দিয়েছে দলটি।
দলীয় প্রতীকের বাইরে তৃণমূল নেতাদের স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে দলের অবস্থান জানতে চাইলে দলীয় প্রতীকের বাইরে স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। পার্টির প্রতীক দিয়ে লন্ডন থেকে স্থানীয় নির্বাচন না করার নির্দেশনা এসেছে। বিষয়টি তৃণমূলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত। সুতরাং এটি নিয়ে কোনো মতানৈক্য গ্রহণযোগ্য হবে না।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, কৌশলগত কারণে বিএনপির এই সিদ্ধান্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মেনে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। এ নিয়ে কোনো বিরোধী মনোভাব সহ্য করা হবে না।
যদিও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না দেয়া নিয়ে মির্জা ফখরুল বিস্তারিত কিছুই জানাননি।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এর আগে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রেক্ষিতে তৃণমূলে যে অসন্তোষ ও নেতাদের দলত্যাগের হিড়িক পড়েছিলো তা থেকে সাবধান হয়েই বিএনপি নতুন করে কৌশলগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না করতে দেয়ার সিদ্ধান্তে নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তৃণমূলে। তৃণমূল নেতারা বলছেন, দল তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বিমাতাসুলভ আচরণ শুরু করেছে।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ থানা বিএনপির একজন নেতা বলেন, দল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বড় ধরণের ভুল করেছিল। যার কারণে দলত্যাগের হিড়িক পড়েছিল। এবার সেখান থেকে কিছুটা সরে আসলেও বিমাতাসুলভ আচরণ করছে দল। নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বড় ব্যাপার। এখন তৃণমূল নেতারা যদি দলীয় প্রতীক না পান তবে যেন আমরা বিএনপির অংশ নই। যদি দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দেয়া হয় তবে প্রার্থীর প্রতি আস্থা তৈরির প্রথম ধাপই পূরণ হবে না। প্রার্থীরা জয়ের ব্যাপারে নিশ্চয়তা পাবে কোথা থেকে? আমরা তো স্বতন্ত্র দল করি না, আমরা বিএনপি করি। তাহলে কেনো স্বতন্ত্র নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত দেয়া হচ্ছে?
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাইকমান্ডের এমন সিদ্ধান্তকে কেউ সহজভাবে গ্রহণ করতে পারছেন না। এর বিরুদ্ধে হাইকমান্ডকে লিখিতভাবে আপত্তি জানানো হবে বলেও প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃবৃন্দ।