নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী:
রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার ৪ নং দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টুর বিরুদ্ধে পুকুর লিজের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও জোরপূর্বক পুকুর দখল ও কৃষকের কাছে থেকে লিজ নেয়া চুক্তিপত্র জালিয়াতি করে দেলুয়াবাড়ী এলাকায় আংরার বিলের ৭৬ (বিঘার) একটি পুকুর জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে।
গত ১ আগষ্ট দূর্গাপুর উপজেলার ৪ নং (দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন) পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টুর বিরুদ্ধে পুকুর মালিকরা একত্রিত হয়ে দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, রাছশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ী গ্রামের সাথে আংরার বিলে গ্রামের কৃষকদের ৭৬ বিঘার একটি পুকুর ১০ বছর আগে ৬০ জন কৃষকদের নিকট থেকে ১০ বছরের জন্য ইউপি চেয়ারম্যান রেন্টু ইজারা নেয়। সেই সময় মাত্র ৯ হাজার টাকা বিঘা প্রতি বছর চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য চেয়ারম্যান রেন্টু কৌশলে লীজ নিয়েছিলেন। পুকুর লীজ নেয়া ১০ বছর পূর্তি হলেও তিনি ১৩ মাসে এক বছর মেয়াদে চুক্তি করে নেয়। কিন্তুু চুক্তিপত্রে কোন কৃষককে দেখাননি তিনি। সেই সময় জমির মালিক কোন কৃষক কে তিনি বলেনি যে, ১৩ মাসে এক বছর হিসাবে পুকুর লীজ নেয়া হয়।
সেই পুকুরে উপজেলার নারায়নপুর জামে মসজিদেরও ২ বিঘা ৫ কাঠা জমি রয়েছে। গত ১৫ জুলাই সন্ধায় গ্রামের সালিসে চেয়ারম্যানকে নিয়ে পুকুরের জমির মালিকরা বসলে তিনি জমির মালিকদের চাপের মুখে পড়ে আগামী ৪ দিন সময় চান পুকুর দখল ছেড়ে দিবে বলে। কিন্তুু তার ৪ দিনের সময় অতিবাহিত হলেও তিনি এখন পর্যন্ত জোর করে পুকুর দখলে রেখেছেন।
চেয়ারম্যান রেন্টু পুকুর মালিকদের কাছে জোর করে দাবি করছেন, তিনি আর ১০ মাস পুকুর তার দখলে রাখবেন। কিন্তুু ৯ হাজার টাকা বিঘা প্রতি বছর হিসাবে আগামী ৬ মাসের জন্য ৪ হাজার ৫০০ টাকা বিঘা প্রতি পরিশোধ করবেন। বাকি ৪ মাসের টাকা পুকুর মালিকদের দিবেন না।
আব্দুল হান্নান, আব্দুল মান্নান, কাউছার আলী, হোসেন আলীসহ একাধিক ভুক্তভোগী পুকুর মালিক এ প্রতিবেদককে জানান, লীজের মেয়াদ শেষ হলেও চেয়ারম্যান রেন্টু জোর করে দখল করে রেখেছে আমাদের পুকুর। তাছাড়া বর্তমান বাজারে ৫০ হাজার টাকা বিঘা প্রতি বছর হিসাবে চুক্তি হচ্ছে এমন একাধিক পুকুর এলাকায়। প্রায় ৬০ জন কৃষকের জমি চেয়ারম্যান রেন্টু জালিয়াতি ও জবর দখল করে তার ক্ষমতার বলে দখল করে রেখেছে। উল্টা হুমকির মুখে রেখেছেন পুকুর মালিক কৃষকদের। কৃষকদের জিম্মি করে রেখেছে রেন্টু।
চেয়ারম্যান রেন্টুর দখল থেকে মুক্ত ও গ্রামের ৬০ জন কৃষকের জমিতে পুকুর তার হাত থেকে উদ্ধার ও ন্যায্য পাওনার টাকা পুকুর মালিকদের বুঝিয়ে দিতে হবে বলে ৪৫ জন পুকুরের জমির মালিক সাক্ষর দিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও) বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন। এবং ওই লিখিত অভিযোগের অনুলিপি রাজশাহী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, দূর্গাপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও দূর্গাপুর থানার অফিসার ইনচার্জকে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয় রাজশাহীর দূর্গাপুর উপজেলার দেলুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম রেন্টু ব্যবহৃত নাম্বারে একাধিক বার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে দূর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।