রবিবার , ডিসেম্বর ২২ ২০২৪
নীড় পাতা / উত্তরবঙ্গ / আ’লীগের প্রভাব খাটিয়ে সিংড়ায় কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে

আ’লীগের প্রভাব খাটিয়ে সিংড়ায় কলেজ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক সিংড়া,,,,,,,,,,নাটোরের সিংড়া উপজেলার বিয়াশ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ নাজমুল ইসলাম রানার বিরুদ্ধে অর্ধ কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। নিয়োগের টাকায় জমি ক্রয়, বাড়ি করার ও অভিযোগ তাদের। কলেজটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে তাদের শ্রম এবং অর্থের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত কলেজ থেকে প্রতারিত হয়েছে প্রায় ৮ থেকে ১০ জন যুবক। এখন তারা ফিরে পেতে চায় তাদের চাকুরী নইলে শ্রম, ঘাম এবং অর্থ। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ নাটোর জেলা আওয়ামী সেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক পদ বাগিয়ে নিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করেছেন অধ্যক্ষ রানা। এর আগে সে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে থেকে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের আস্থাভাজন হয়। তারপর কিছু যুবক, তরুণদের নিয়ে ২০১০ সালে গড়ে তোলেন বিয়াশ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। ২০১৯ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্তি লাভ করলে সম্পূর্ণ গোপনে সকল নিয়োগ কার্যক্রম করেন। এতে সহযোগিতা করেন অধ্যক্ষ নাজমুল ইসলাম রানার বাবা। তাকেই ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করে সকল নিয়োগ কার্যক্রম গোপনে সম্পূর্ণ করেন। জানা যায়, ২০১০ সালে উপজেলার ডাহিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে প্রতিষ্ঠা করে বিয়াশ টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেন নাজমুল ইসলাম রানা। সভাপতি করেন তারই বাবা বাচ্চু কে। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তারই বাবা কে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে রেখে সকল দুর্নীতি, অনিয়ম করেন। তার চাচা শারফুল ইসলাম সেন্টু কে ২০১০ সাল থেকে বিদ্যুৎসাহী সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। অধ্যক্ষের স্ত্রী শিউলী খাতুন কে গোপনে বাংলা প্রভাষক পদে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষক প্রতিনিধি করা হয়। ম্যানেজিং কমিটির দাতা সদস্য করা হয় সাবেক ইউপি সদস্য আ: মান্নান এবং তার স্ত্রী নাদিরা বেগম অভিভাবক সদস্য করা হয়। ২০১৪ সালে তাদের কে বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতির আশ্রয় নিয়ে মনগড়া কমিটি করেন অধ্যক্ষ। তারপর থেকে পছন্দের লোক নিয়ে প্রতিষ্ঠাকালিন শিক্ষক, কর্মচারীদের বাদ দিয়ে নিয়োগ শুরু করেন। নিয়োগ বাণিজ্যের টাকায় সিংড়া পৌর এলাকার সরকার পাড়ায় ১ টি বাড়ি সহ ১০ শতাংশ জায়গা ক্রয় করেন। চাঁদপুর মহল্লায় ৬ শতক জমি ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। তার চাচা পেট্রোবাংলায় একটি দুই তলা বিশিষ্ট কোটি টাকার ভবন নির্মান করেছেন। তার বাবারও একটি চার তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে। খোলাবাড়িয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আ: মান্নান জানান, আমরা ৫০ শতক জমি স্কুলে দান করি। আমার ছেলে নাইমকে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে ঐ প্রতিষ্ঠানে চাকুরী দেয়ার কথা ছিলো। অথচ দেয়নি। অধ্যক্ষের ছোট ভাই নাইমুল ইসলাম রনিকে ঐ পোস্টে নিয়োগ দেয়। এছাড়া যাদের কাছ থেকে অর্থ নেয়ার পরও বাদ দেয়া হয় এমন কয়েকজন মো: জাহিদুল ইসলাম, তাকে ২০১০ সালে বাংলা প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে ঐ পদে অধ্যক্ষের স্ত্রী শিউলী খাতুনকে নিয়োগ দেয়া হয়। ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে ২০১৬ সালে শিপন আলীকে নিয়োগ দেয়া হয়। তিনি ৫ লক্ষ টাকা অধ্যক্ষ সহ তার সহযোগিদের প্রদান করেন। ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত নিয়মিত ক্লাসে উপস্থিত সহ যাবতীয় কার্যক্রম করলেও পরে তিনি জানতে পারেন তার স্থলে রনি নামে একজন কে বড় ধরনের উৎকোচের বিনিময়ে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সোহেল রানা কে নিম্নমান সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে নিয়োগ দেয়। তার কাছ থেকে ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। সে ২০১০ সাল থেকে কলেজে যাতায়াত সহ সকল কার্যক্রমে অংশ নিলেও তার বিপরীতে একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। তার কাছ থেকে ও বিপুল অর্থ গ্রহন করে। সোহেল রানা জানতে পারেন তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। এরশাদ আলী ২০১০ সালে কম্পিউটার প্রদর্শক পদে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে ৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। ঐ পদে অন্য একজনকে বড় অংকের বিনিময়ে চাকুরী দেয়া হয়। ২০১০ সাল থেকে মাহবুব আলম কে ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগের কথা বলে ৫ লক্ষ টাকা নিয়ে ঐ পদে অন্যজনকে নিয়োগ দেয়। সে ২০২২ সাল পর্যন্ত কমর্রত থাকার পর জানতে পারেন এমপিও তালিকায় তার নাম নাই। শারমিন আক্তার কে সহকারী গ্রন্থাগার পদে ২০১৫ সালে নিয়োগ দেয়া হয়। সেও টাকা ৬ লক্ষ টাকা নিয়ে ঐ পদে অপর একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়। এমদাদুল হক মজনু কে দপ্তরী পদে নিয়োগের কথা বলে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কর্মরত থাকার পর তিনি জানতে পারেন তার বদলে আবুল কালাম আজাদ নামে একজন কে নিয়োগ দিয়েছে। এসব বিষয়ে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নাজমুল ইসলাম রানা বলেন, আমি যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। সে টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এখন অযথা হয়রানী করার জন্য বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিনুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমি একটা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি বিস্তারিত জানতে হবে।

আরও দেখুন

পেঁয়াজের চারা পুড়ে শেষ-কৃষকের মাথায় হাত! জমিতে এখন শুধুই ঘাস!

নিজস্ব প্রতিবেদক নলডাঙ্গা,,,,,,,,,,,,,,,,,জমিতে নষ্ট হওয়া পেঁয়াজের চারা দেখে নিজেদের ধরে রাখতে পারেননি জমি লিজ নিয়ে …