‘নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি’ নামে নতুন একটি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে লাইসেন্স দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য প্রতিষ্ঠানটির নামে লেটার অব ইনটেন্ট (আগ্রহপত্র) ইস্যু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম।
তিনি বলেন, পর্ষদ নগদ ফাইন্যান্স পিএলসির বিষয়ে কয়েকটি শর্ত দিয়ে লেটার অব ইনটেন্ট ইস্যুর অনুমতি দিয়েছে।
বোর্ড সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের পরিচালকরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগদ লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক ঢাকা পোস্টকে বলেন, নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি বাংলাদেশ ব্যাংকের বোর্ডে অনুমোদন পেয়েছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা খবর পেয়েছি। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কিছু পাইনি।
তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা অনুসারে চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি স্বতন্ত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচালিত হবে। ডাক বিভাগের সঙ্গে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ লিমিটেডে’র বিদ্যমান সম্পর্ক অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ নগদ লিমিটেড ডাক বিভাগের সেবা হিসেবেই পরিচালিত হবে। সেক্ষেত্রে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি অন্য আর ১০টি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মতো পরিচালিত হবে।
মিশুক বলেন, একটি মোবাইল আর্থিক সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নগদ লিমিটেড এখন অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে। এক্ষেত্রে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি এবং নগদ লিমিটেডের মধ্যেও সেরকম সম্পর্ক তৈরি হবে। তখন নগদ ফাইন্যান্স পিএলসির বিভিন্ন প্রডাক্ট নগদ লিমিটেডের মাধ্যমে বিপণন করা হবে। ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বাইরে থাকা প্রান্তিক মানুষকে সেবার আওতায় আনতে নগদ ফাইন্যান্স পিএলসি এবং নগদ লিমিটেড যৌথভাবে কাজ করতে পারবে। তাতে সেবার খরচও কমবে এবং সেবার গুণগত মানও আগের চেয়ে ভালো হবে।
নিয়ম অনুযায়ী, দেশে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান (সাবসিডিয়ারি) হতে হয়। কিন্তু নগদ এতদিন কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবসিডিয়ারি ছিল না। তাই তারা এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স পায়নি। মোবাইলে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করেছে ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এখন আর্থিক আলাদা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করে সেই ঘাটতি কাটানো হচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে পরবর্তীতে ডাক বিভাগ থেকে বের হয়ে ‘নগদ’ মোবাইল ব্যাংকিং নগদ ফাইন্যান্স-এর অধীনে চলে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ফেব্রুয়ারিতে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বিধিমালা ২০২২– জারি করে। ওই বিধিমালা অনুযায়ী, ব্যাংকের পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানও এখন থেকে এমএফএস দিতে পারবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে এমএফএস লাইসেন্স দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগে শুধু ব্যাংক ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠানের এই সেবা দেওয়ার সুযোগ ছিল। সেই সুবিধার আওতায় নগদ ফাইন্যান্স পিএলসিকে আজ লাইসেন্সের জন্য প্রাথমিক অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।