নিউজ ডেস্ক:
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো (এনবিএফআই) ইচ্ছে মতো ঋণের সুদ নিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান ১৬ থেকে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত সুদ নির্ধারণ করছে। এতে বিপাকে পড়ছেন ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা ও ঋণগ্রহীতারা। তাই যৌক্তিক পর্যায় নামিয়ে আনতে ব্যাংকের মতো আর্থিক প্রতিষ্ঠানেরও ঋণের সুদহার বেঁধে দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ব্যাংকগুলোর সর্বোচ্চ ঋণের সুদ হার ৯ হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণের সুদহার বেঁধে দেওয়া ছিল না। তারা তাদের ইচ্ছে মতো সুদহার নির্ধারণ করছে। কোনো কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ, আবার অনেকে ১৮ শতাংশও সুদ নিচ্ছে। এটি বাজারের জন্য সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের আমানত ও ঋণ, লিজ ও বিনিয়ােগের সুদ বা মুনাফার হার যৌক্তিক পর্যায়ে আনার বিষয়ে একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড বিষয়টির সঙ্গে একমত হয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সুদহার কত টাকা বেঁধে দেওয়া হবে জানতে চাইলে মুখপাত্র বলেন, বোর্ড এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। এখন সংশ্লিষ্টরা বিচার বিশ্লেষণ করে নির্ধারণ করবে সুদহার কত টাকায় নামিয়ে আনা যায়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বোর্ড সভায় সভাপতিত্ব করেন। এসময় বোর্ড সদস্যসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, আজকের সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অফিসে যাতায়াতের জন্য এসি বাস সরবরাহ ও অপারেশন ম্যানেজার হতে সিনিয়র অপারেশন ম্যানেজার পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে কম্পিউটার অপারেশন সুপারভাইজার পদ হতে অপারেশন ম্যানেজার পদে পদোন্নতির নীতিমালা অনুসরণ করার পাশাপাশি দুর্নীতির দায়ে শাস্তি পাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের এক উপমহাব্যবস্থাপকের শাস্তি মওকুফ বিষয়ে আলোচনা হয়।
এছাড়া সিআইবি রিপাের্টে ঋণের তথ্য গােপন করার অভিযােগে অগ্রণী ব্যাংকের বিরুদ্ধে করা জরিমানা মওকুফের আবেদন এবং পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক দি ফারমার্স ব্যাংক লি.) সহজে বিনিময়যােগ্য সম্পদ (এসএলআর) সংরক্ষণের হার পুনর্নির্ধারণ প্রসঙ্গে আলোচনা হয়। তবে এসব বিষয়ে বোর্ড কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা জানতে চাইলে কিছু বলতে রাজি হননি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র।
এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঋণের সুদ হার ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। যা ওই বছরের এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়। এর ফলে নতুন ও পুরোনো সব ধরনের ঋণে সুদ হার হয় ৯ শতাংশে নেমে আসে। ব্যাংক কোম্পানি আইনের ৪৫ ধারা অনুযায়ী ‘জনস্বার্থে’ এ নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই বছর ২৪ সেপ্টেম্বর ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দেওয়া হয়। দেশের কোনো ব্যাংকই ক্রেডিট কার্ডে ২০ শতাংশের বেশি সুদ আদায় করতে পারবে না। যা ওই বছর ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়।