নিউজ ডেস্ক:
দেশ থেকে অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন ঠেকাতে আর্থিক খাতের সব গ্রাহকের পরিচিতি ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আওতায় গ্রাহকদের পরিচিতিকে ডিজিটাল কেওয়াইসি বা ই-কেওয়াসি (নো ইউর কাস্টমার বা গ্রাহককে জানো) প্রণয়ন করা হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) রোববার বিশ্বব্যাংকের সহযোগী সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
এর আওতায় বাণিজ্যিক ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারী, বিমার গ্রাহকসহ আর্থিক খাতের গ্রাহকদের ই-কেওয়াইসি প্রণয়ন করা হবে। ২০০২ সালে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে ব্যাংক হিসাব খুলতে গ্রাহকদের কেওয়াইসি নামে একটি ফরম পূরণ করতে হয়।
এতে গ্রাহকের পূর্ণাঙ্গ পরিচিতি, আয়ের উৎস, লেনদেনের সীমাসহ নানা তথ্য থাকে। এসব তথ্য দিয়ে গ্রাহককে যেমন শনাক্ত করা যায়, তেমনি গ্রাহকের হিসাবে কোনো অস্বাভাবিক লেনদেন হলেও তা শনাক্ত করা সহজ হয়। বর্তমানে কেওয়াইসি বাধ্যতামূলক। এটি ম্যানুয়াল আকারে করা হয়। এখন এটিকে ডিজিটাল করা হচ্ছে। অর্থাৎ বোতাম টিপেই গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই পদ্ধতি কার্যকর হলে কোনো গ্রাহকের হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন হলে তা সহজেই শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। একই সঙ্গে আর্থিক খাত ব্যবহার করে টাকা পাচার বা সন্ত্রাসে অর্থায়ন বা দুর্নীতি করা কঠিন হবে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সতর্ক থাকলে এসব ঠেকানো যাবে। কেননা দুর্নীতি বা পাচারের টাকা কোনো না কোনো একটা পর্যায়ে ব্যাংকিং চ্যানেলে আসে। তখন গ্রাহকের তথ্য বিশ্লেষণ করে এগুলো ঠেকানো সম্ভব হবে।
ই-কেওয়াইসি আর্থিক খাতে এই ধরনের ঝুঁকি কমানোর জন্য বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারবে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে ডিজিটাল ব্যাংকিং শুরু হয়েছে। একে নিরাপদ করতে ই-কেওয়াইসি শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে। প্রাথমিকভাবে দেড় হাজার গ্রাহকের কেওয়াইসিকে ই-কেওয়াইসিতে রূপান্তর করে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি গ্রাহককে এর আওতায় আনা হবে।