নারদ বার্তা পরিবর্তনের অঙ্গিকার নিয়ে
নিউজ ডেস্ক:
পারস্পরিক স্বার্থে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মঙ্গলবার (৮ মার্চ) বিকালে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সে দেশের উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। দুবাই প্রদর্শনী কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে দুই দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দুই প্রধানমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এ তথ্য দেন।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রচুর ব্যবসা ও বিনিয়োগের সুযোগ থাকার কথা তুলে ধরেন। আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মাকতুম বাংলাদেশ ও আমিরাতের মধ্যে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে চলমান তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ এবং বিমানবন্দরের সক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টার কথা তুলে ধরেন। বৈঠকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্যোগ ও সফলতার প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা।
আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীও করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন দুবাইয়ের শাসক। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের আরও উন্নয়ন করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। শেখ হাসিনাও সংযুক্ত আরব আমিরাত বিশেষ করে দুবাইয়ের অভূতপূর্ব উন্নয়নের প্রশংসা করেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপনের সময় দুবাই সফরে থাকায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন দুবাইরে শাসক রশিদ আল মাকতুম। দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে, অটিজম ও স্নায়ু-বিকাশজনিত সমস্যাবিষয়ক জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল; পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন; বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি; প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ক মন্ত্রী ইমরান আহমদ; প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস; পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আবু জাফর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিআইআইএসএস)-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাকসুদুর রহমান, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই)-এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
১২ মার্চ দেশে ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ঢাকা-আবুধাবি চার সমঝোতা স্মারক সই : পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে চারটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। মঙ্গলবার বিকালে দুবাই প্রদর্শনী কেন্দ্রে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে তাঁদের উপস্থিতিতে এসব সমঝোতা স্মারক সই হয়। পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
চারটি সমঝোতা স্মারক হলো : উচ্চতর শিক্ষা এবং বিজ্ঞান গবেষণা বিষয়ে সহযোগিতা; বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিআইআইএসএস) এবং এমিরেটস সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস অ্যান্ড রিসার্চের (ইসিএসএসআর) মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক; কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যে সমঝোতা এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ও দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের একটি সমঝোতা স্মারক। উচ্চতর শিক্ষা এবং বিজ্ঞান গবেষণা নিয়ে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারকে সই করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিক্ষামন্ত্রী হুসাইন বিন ইবরাহিম আল হামাদি; কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ বিষয়ে দুই দেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমির মধ্যকার সমঝোতা স্মারকে সই করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিমন্ত্রী আহমদ আলী আল সায়েগ। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিআইআইএসএস) ও এমিরেটস সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস অ্যান্ড রিসার্চের (ইসিএসএসআর) মধ্যকার সমঝোতা স্মারকে সই করেন বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান কাজী ইমতিয়াজ হোসেন ও ইসিএসএসআরের মহাপরিচালক সুলতান মুহাম্মদ আল-নুয়াইমি; ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ও দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের সমঝোতা স্মারকে সই করেন এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট মো. জসিম উদ্দিন ও দুবাই ইন্টারন্যাশনাল চেম্বারের চেয়ারম্যান সুলতান বিন সুলাইয়েম।
