নিউজ ডেস্ক:
পটুয়াখালীর পায়রায় গভীর সমুদ্রে পাইপলাইনসহ আরও একটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল স্থাপন করতে যাচ্ছে এক্সিলারেট গ্লোবাল অপারেশনস। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে পেট্রোবাংলার অনুস্বাক্ষরিত খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সভায় এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।
সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনসহ তিন প্রস্তাবের অনুমোদন হয়। একই সঙ্গে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৫০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাবসহ ১৭ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৫ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।
মহেশখালী উপকূলে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহের যে দুটি ভাসমান টার্মিনাল রয়েছে, এর একটি পরিচালনা করছে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান সামিট এলএনজি টার্মিনাল। অন্যটির পরিচালনায় রয়েছে এক্সিলারেট গ্লোবালের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এক্সিলারেট এনার্জি।
এর আগে গত ৯ আগস্ট অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি সরবরাহের এক্সিলারেট এনার্জি বাংলাদেশ ও সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিংয়ের সঙ্গে চুক্তি করতে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। এ দুটি কোম্পানির মোট সরবরাহ ক্ষমতা ১ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে আন্তর্জাতিক খোলাবাজার এবং কাতার ও ওমান থেকে কেনা এলএনজি এসব টার্মিনালের মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হচ্ছে। নতুন করে সামিট ও এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে সরবরাহ চুক্তি করা হলে টার্মিনাল সুবিধার পাশাপাশি এলএনজি সরবরাহ ব্যবসায়ও যুক্ত হতে পারবে এই দুই কোম্পানি।
এ ছাড়া সভায় ‘মুজিব একটি জাতির রূপকার’ বায়োপিক চলচ্চিত্রের প্রচারণা ও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি কার্যক্রম সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। একই সঙ্গে পূর্বাচল সিটির স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা পিপিপি পদ্ধতিতে সম্পন্ন করারও অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠকে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার টন গম আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সিঙ্গাপুরের প্রতিষ্ঠান এগ্রোকরপ ইন্টারন্যাশনাল এ গম সরবরাহের কাজ পেয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতি টন ৩০৪ দশমিক ৮৩ মার্কিন ডলার হিসাবে মোট ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৮৯ লাখ। সেই হিসাবে প্রতি কেজি গমের দাম পড়ছে ৩৩ টাকা ৩৮ পয়সা। টিসিবির মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে বিক্রির জন্য স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে ৮ হাজার টন মসুর ডাল ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি কেজি ৯৪ টাকা ৪৪ পয়সা দরে ডাল সরবরাহ করবে নাবিল নবা ফুডস। এতে মোট ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
সভায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে মরক্কো, সৌদি আরব ও কানাডা থেকে পৃথক পাঁচটি প্রস্তাবের আওতায় দেশের কৃষি খাতে ব্যবহারের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে মরক্কো থেকে ৩০ হাজার টন টিএসপি ও ৪০ হাজার টন ডিএপি সার, সৌদি আরব থেকে ৪০ হাজার টন ডিএপি সার, কানাডা থেকে ৫০ হাজার টন করে দুটি প্রস্তাব মোট ১ লাখ টন এমওপি সার আমদানি করা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৮৫৬ কোটি ৫৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
এ ছাড়া কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি থেকে ৩০ হাজার টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার ক্রয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। প্রতি টন ৩৯৯.৭৫ ডলার দরে এ সার কেনা হবে। সেই হিসাবে মোট ব্যয় হবে ১৩০ কোটি ৭১ লাখ টাকা।
চট্টগ্রামের ডিএপি ফার্টিলাইজার কোম্পানি লি.-এর জন্য ১০ হাজার টন ফসফরিক এসিড আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে ৬১ কোটি ৯ লাখ টাকা।