নিউজ ডেস্ক: জাতীয় দৈনিক পত্রিকা প্রথম আলোর অনুষ্ঠানে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র নাইমুল আবরার। অনুষ্ঠানে যাতে ব্যাঘাত না ঘটে সেই লক্ষ্যে আবরারের বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হবার ঘটনা কনসার্ট চলাকালীন পুরো সময়জুড়ে গোপন রাখে প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা।
এ প্রসঙ্গে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের শিক্ষার্থী রিহান বলেন, মানুষ মারা গেলো অথচ মৃত্যুর খবর চেপে রেখে কেন গান চললো? মানুষ কতটা নির্মম হলে এমন কাজ করতে পারে! আবরার যখন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়, তখন ছেলেটিকে বাঁচানোর জন্য পাশে সোহরাওয়ার্দীতে নেয়া যেতো। কিন্তু তা না করে আবরারকে নিয়ে যাওয়া হয় দূরে মহাখালীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে। কারণ হাসপাতালটি প্রথম আলোর স্পন্সর। মানুষের জীবনের চেয়ে যাদের কাছে স্পন্সর, টাকা বড়, তারা আসলে কতটা মানবিক? তারা আসলে সুযোগসন্ধানী। প্রথম আলোর এই আচরণই প্রমাণ করে, শুধু মাত্র ব্যবসায়িক খাতিরেই গণমাধ্যম চালায়।
এ সময় আবারের অপর বন্ধু জুলকার বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটার সময় সে আহত হয়েছে। তখন কেন ঘটনাটা জানানো হয়নি? অনুষ্ঠানস্থলের পাশেই ওর ডেডবডিটা ছিলো। কেন অনুষ্ঠানটা চললো? এরপরেও কেন দুই ঘণ্টা ধরে গান চললো? আমরা এর জবাব চাই।
আবরারের এক সহপাঠী বলেন, এতবড় একটা দুর্ঘটনা ঘটলো অথচ আবরারকে মোহাম্মদপুর থেকে নিয়ে যাওয়া হলো মহাখালীতে। এতদূর নিতে হলো কেন? আশপাশেই তো কত হাসপাতাল ছিলো, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালও তো ছিলো।
নামাজে জানাজার পর তুহিন নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, রাত ১২টার পর জানাজা করা হয়েছে। এটা কি কোন কিছু ধামাচাপা দেয়ার জন্য হচ্ছে? তিনটার দিকে ঘটনা ঘটলো আর আমরা জানতে পারলাম রাত নয়টার পরে। কেন প্রথম আলোর ‘কিশোর আলো’র পক্ষ থেকে আমাদের কিছুই জানানো হলো না? এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই আমরা।
বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমাদের জন্য লজ্জার। ‘গণমাধ্যম’ নামের এমন বিবেক বর্জিত মাধ্যম, যারা দেশ নিয়ে কথা বলে তারা যে দেশের ভালো চায়, মানুষের ভালো চায় সেই নিশ্চয়তা কোথায় পাবো। আজ যদি সরকারি কোনো প্রোগ্রামে এমন কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যেত তবে বিষয়টিকে নিয়ে নানা ধরণের নিউজ হতো। কিন্তু আজ প্রথম আলো এ বিষয় নিয়ে একটা দুঃখপ্রকাশের মতো বার্তাও দেয়নি। এসব স্বার্থবাদী মিডিয়াকে বর্জন করা উচিত। অথচ তাদের চোখেই আমরা দুনিয়া দেখি! অথচ তারাই এমন লজ্জাজনক ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এর আগে রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় কয়েক’শ মানুষের প্রাণহানির মাঝেও মেরিল প্রথম আলো’র মতো অনুষ্ঠান চালিয়ে গিয়েছিলো প্রথম আলো। তারাই প্রমাণ করে, সচেতনতা নয়, ব্যবসার খাতিরে সংবাদ প্রচার করছে প্রথম আলো। যা নিতান্তই দুঃখজনক।