নিউজ ডেস্ক:
শোকের মাস আগস্টে বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় আওয়ামী লীগ কর্মসূচির ধরন পালটাচ্ছে। অতীতে এই মাসে দলটি কঠিন কোনো কর্মসূচিতে না গেলেও এবার নেতাদের ভাবনায় পরিবর্তন এসেছে।
তারা বলছেন, বিএনপিকে মোকাবিলায় তাদের চলমান রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি অতীতের মতোই পালন করা হবে মাসব্যাপী শোক কর্মসূচি। তবে আগস্টে এবার কী ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে আওয়ামী লীগ, তা এখনো ঠিক হয়নি। বিএনপির কর্মসূচি দেখে নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন। আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক যুগান্তরকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট আগামীকাল বুধবার থেকে সপ্তাহব্যাপী সমাবেশ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার অনুষ্ঠিত ১৪ দলের বৈঠক থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, আগস্ট মাসে আওয়ামী লীগের কমর্সূচির ধরন পালটাবে। রাজধানীর প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি সহিংসতা করেছে বলে অভিযোগ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, কাল (আজ) থেকে শোকের মাস। এবার শোকের মাসের কর্মসূচির ধরন ভিন্ন হবে। আমরা আমাদের কর্মসূচিকে ঢেলে সাজাচ্ছি। কর্মসূচি আমরা ছেড়ে দিইনি। নির্বাচন পর্যন্ত ছাড়াছাড়ি নেই, আমরা মাঠে আছি, সতর্ক অবস্থানে আছি।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক সোমবার রাতে যুগান্তরকে বলেন, বিএনপি যদি তাদের অযৌক্তিক আন্দোলন চালিয়ে যায়, তাহলে আমরাও বিদ্যমান রাজনৈতিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। পাশাপাশি থাকবে শোকের মাসের কর্মসূচি। প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে এসে আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি দিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যে কোনো সহিংসতা রুখবে বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আবদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, তারা (বিএনপি) কী কর্মসূচি দেয়, তা দেখার বিষয়। সাধারণত আমরা আগস্ট মাসে শোক কর্মসূচি পালন করে থাকি। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। নিশ্চয় কর্মসূচির ধরন পালটাবে। তবে কী ধরনের কর্মসূচি আসতে পারে, তা এখনো চূড়ান্ত নয় বলে জানান আবদুর রহমান।
দলটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ যুগান্তরকে বলেন, শোকের মাসে সাধারণত আমরা আলোচনা ও স্মরণসভা, রক্তদান, মানববন্ধন, মোমবাতি প্রজ্বালন, খাদ্য বিতরণ প্রভৃতি কর্মসূচি পালন করে থাকি। তবে এবার ব্যতিক্রম হতে পারে। বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় কী ধরনের কর্মসূচি নেওয়া হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি বলে জানান তিনি। সোমবার আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আগস্টব্যাপী শোকের কর্মসূচি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
সেখানে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিনে তারেক রহমানকে তরুণ প্রজন্মের দেশব্যাপী ‘রেড কার্ড’ প্রদর্শন কর্মসূচি রাখা হয়েছে। এর বাইরে কঠিন কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, কাল ২ আগস্ট রংপুরের জনসভা শেষ করে এসে দলীয় নেতাদের নিয়ে বসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বৈঠকে বিএনপির একদফার আন্দোলন মোকাবিলায় সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে।
অবশ্য এর আগে বিএনপি তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করলে আরও দ্রুত সিদ্ধান্ত জানাবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। গণভবন সূত্র জানিয়েছে, প্রচলিত ধারা থেকে বেরিয়ে আগস্ট মাসে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে নীতিগতভাবে একমত আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড।
বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি চান আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থাকুক। বিএনপি যাতে কোনোভাবেই মাঠ ফাঁকা না পায়, সেজন্য দলীয় নেতাদের সতর্ক করেছেন তিনি। ৬ আগস্ট গণভবনে অনুষ্ঠেয় বিশেষ বর্ধিত সভায় এ বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।