বিশেষ প্রতিবেদকঃ
জাবি, পাবিপ্রবির পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সমসাময়িক উত্তপ্ত ছিলো বেরোবি ক্যাম্পাস । বেরোবি’র আসন্ন ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার সময় ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীদের হলে অবস্থানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো বেরোবি প্রশাসন । এই নিষেধাজ্ঞায় অসন্তষ্ট সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ গতকয়েক দিন থেকেই ফুলে ফুঁসে উঠেছিলো যার চূড়ান্ত রুপ আজকের বিক্ষোভ ও অবরোধের মাধ্যমে প্রকাশ করেছে । অবশ্য এর আগেই বেরোবির দুই হলের ছাত্রলীগ সভাপতি বেরোবি প্রশাসনকে তাদের সিদ্ধান্ত পুণঃবিবেচনা করার অনুরোধ করেছিলো অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছিলো।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে তিন দফা দাবী করে আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে । আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগ ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রীরা অংশ নিলে আন্দোলন পূর্ণতা পায় , উত্তপ্ত হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও মহাসড়কের অবস্থা । এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন । বিকেল তিনটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে এসে তোপের মুখে পড়েন শহীদ মুখতার ইলাহী হলের প্রভোস্ট শাহীনুর রহমান । এসময় প্রভোস্টকে লক্ষ্য করে আন্দোলনে অংশ নেয়া বিক্ষুব্ধরা ভুয়া ভুয়া বলে শ্লোগান দেয় ।
আন্দোলনের মাত্রা বেগবান করার জন্য বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তুষার কিবরিয়া ও সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান নোবেল শেখ।এ সময় কামরুল হাসান নোবেল শেখ এক সংক্ষিপ্ত বক্তৃতিতায় বলেন,আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক আন্দোলনে পাশে আছি।দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আপনারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, লিখিত আশ্বাস ছাড়া কোনভাবেই আন্দোলন প্রত্যাহার করা হবেনা ।১১ টায় ক্যাম্পাসের বিক্ষোভ আন্দোলনে বিকেল গড়ার সাথে সাথেই মহাসড়কে এসে আন্দোলনের মাত্রা তীব্রতর হয় ।উত্তপ্ত এই পরিস্থিতি সামাল দিতে আন্দোলনকারীদের সামনে স্বয়ং ভিসি উপস্থিত হয়ে দাবী মেনে নেয়ার ঘোষণা দেন, তিনি বলেন, ” বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাথে জরুরী মিটিং থাকায় তিনি আগে আসতে পারেননি।তবে তিনি নিয়নিত খোঁজখবর রাখছিলেন।মঞ্জুরি কমিশনের সাথে মিটিং শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে আলোচনা করে শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবী মেনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।উপাচার্যের বক্তব্য শুনে বিজয়ের উল্লাসে মেতে উঠেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা” এসময় তারা আনন্দ মিছিল বের করেন ।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন ভর্তিচ্ছুকদের হলে থাকার অনুমতি দেওয়া, বিগত সময়ে ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভর্তি পরীক্ষার সময় ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ও এ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িতদের হয়রানি বন্ধ করা।
আন্দোলন শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, “সকাল ১১টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া চত্বরে সমাবেশ করে প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে।এ সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের সাথে কোন প্রকার আলোচনা ছাড়াই প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক ভেতর থেকে তালা বদ্ধ করে রাখা হয়।এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্দ হয়ে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বের হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
আগামী ১০ থেকে ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। নিরাপত্তার স্বার্থে সে সময় শুধু বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করতে পারবে। এছাড়া ডরমেটরিতে কোনো অতিথি অবস্থান করতে পারবে না বলে গত ২৯ অক্টোবর ভর্তি কমিটির চতুর্থ সভায় সিদ্ধান্ত হয়।