বিশ্বের সব আলোচনার কেন্দ্রে করোনা ভাইরাস। পুরোবিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছে এরইমধ্যে। প্রধান ধনী দেশগুলো পর্যন্ত সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থায় দেশের মানুষ এখনও শতভাগ সচেতন নয়। বিনা কারণে বাইরে ঘুরছেন অনেকে। প্রবাসীদের মাঝে সচেতনতার উদাসীনতায় দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতা বাড়ছে। সঠিক নির্দেশনা না পাওয়ায় হালকাভাবে দেখছেন এই বিশ্ব কাঁপিয়ে দেওয়া ভাইরাসকে। তাই শুধু নিজের জন্যেই নয়, সমাজের জন্যে হলেও সচেতনতার আহ্বান জানাচ্ছেন দেশের তারকারা। তারকাদের অনেকেই ভিডিও বার্তার মাধ্যমে, আবার কেউ গণমাধ্যমে মাধ্যমে দেশের মানুষকে সমাজের কল্যাণের সচেতন থাকার অনুরোধ করছেন।
অভিনেতা মিশা সওদাগর দেশে থাকলেও তার স্ত্রী-সন্তান থাকছেন নিউইয়র্কে। সেখানে তারা হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও দেশ থেকে খুব চিন্তায় আছেন এ অভিনেতা। সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে মানুষকে সচেতন করতে এফডিসিতে আসেন তিনি। সেখানে তার নেতৃত্বে হয় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি। মানুষের মাঝে মাস্ক বিতরণ করে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি।
মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমার পরিবারের সবাই নিউইয়র্কে। তাদের নিয়ে চিন্তা হচ্ছে। দোয়া করি পুরোবিশ্বের সবাই এই সঙ্কটময় অবস্থা থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসুক। এ অবস্থায় আমি চেয়েছিলাম তাদের পাশে থাকতে। কিন্তু যেতে পারিনি। প্রবাসী ভাইয়েরা যারা দেশের বাইরে থেকে আসছেন তারা প্লিজ কোয়ারেন্টাইনে থাকুন কমপক্ষে দুই সপ্তাহ। দেশে যে কজন করোনায় আক্রান্ত তাদের ইতালি ফেরত প্রবাসীর সংস্পর্শ পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। নতুন করে যেন এ রোগ না ছড়ায় সেদিকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করুন। সবাইকে আহ্বান জানাবো নিজের ও সমাজের সবার জন্য হলেও সবার জায়গা থেকে সচেতনতা জরুরি। কারণ আমরা কে কীভাবে এই ভাইরাসটি বহন করছি জানি না। নিজের অসচেতনতা পরিবারের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে।
প্রবাসী ভাইদের বলবো করোনা ভাইরাস নিয়ে আপনারা ইমোশনাল নয়, প্রফেশনাল হন। জোরাজুরি নয়, স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে যান। এ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে গাণিতিক হারে। কাজেই এক পরিবারে ৩ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সেখান থেকে ৯ জনের মধ্যে যাবে। সেখান থেকে আরও বাড়বে। দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনে থাকলে নিজে ভালো থাকবেন, আপনার পরিবার-স্বজনরাও ভালো থাকবে। এর সঙ্গে সঙ্গে সচেতনতা বাড়ান।’
করোনা ভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা দিলেন গায়ক ও অভিনেতা তাহসান। ফেসবুক পেজে তাহসান বলেন, ‘আমাদের যদি একান্তই বের হতে হয় তাহলে যেন মাস্ক পরি, আর সচেতন থাকি। আমরা আতঙ্কিত না হয়ে এই কিছুদিন বাসায় থাকি সবাই। আর যারা স্বাস্থ্যসেবী আছেন তাদের কাজে কোনোরকম ব্যাঘাত না ঘটাই! অকারণে হাসপাতালে ভিড় না জমাই। সারা পৃথিবীতেই যে যার যার অবস্থান থেকে এই সমস্যা মোকাবিলা করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমরা যারা মিডিয়াতে কাজ করি তাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। অনেকে সেই দায়িত্বের জায়গা থেকে অনেককিছু করছে। যারা গান করে তারা এখন বাইরে না গিয়ে বাসায় সেটা করছে। একটা ঘরের মধ্যে বন্দি থাকা আসলে কিন্তু অনেক কঠিন। সেই জায়গা থেকে তাই অনেকেই হয়তো ঘরে বসে গান করছে বা বিনোদিত করছে। সেটাকে অন্যভাবে নেওয়ার কিছু নেই। সবাই এটাই বোঝাতে চাইছেন যে, আমরাও বাসা থেকে বের হচ্ছি না, সুতরাং আপনারাও বের হবেন না।’
সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে এগিয়ে এসেছেন অভিনেত্রী নাদিয়া আহমেদ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে যথাযথভাবে হাত ধুতে হয়।
নাদিয়া বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আমরা সবাই খুব বেশি সচেতন। সবচেয়ে বেশি যে উপায়ে নিজেকে নিরাপদে রাখতে পারি সেটা হলো হাত পরিষ্কার রাখা। আমরা হাত দিয়ে অনেককিছু করছি, বাইরে যাচ্ছি, টাকা ধরছি। তাই সবাই সবার আগে আমাদের হাত ধোয়া দরকার। এই হাত আমাদের নিরাপদ রাখতে হবে, এই হাত দিয়ে খাবার খাচ্ছি, চোখ চুলকাচ্ছি, অনেক সময়ে আবার নাকে হাত দিচ্ছি।’
দেশের প্রায় অনেক তারকা সামাজিক সচেতনতা বাড়ানোর পক্ষেই জোর দিচ্ছেন। একে অন্যকে সচেতন করার আহ্বান জানাচ্ছেন।