নিজস্ব প্রতিবেদক:
র্দীঘ ৮ বছর পর ২০ ফেব্রুয়ারী নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্টিত হতে যাচ্ছে । সম্মেলনকে ঘিরে পোষ্টার, ব্যানার ও বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে পুরো শহর । সভাপতি- সম্পাদক কে হচ্ছেন তা নিয়ে চলছে জল্পনা –কল্পনা ।
নাটোরে আট বছরের মাথায় আগামী রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল। জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল হলেও জেলা জুড়ে নেতাকর্মীদের মূল আলোচনায় রয়েছে বিএনপি জামায়াত প্রসঙ্গ। নেতারা এক পক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করতে নৌকার বিরোধীতাকারী আখ্যায়িত করার সাথে সাথে বিএনপি জামায়াত পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ তুলেছেন। নাটোরের বাবু শংকর গোবিন্দ চৌধুরী ষ্টেডিয়ামে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারী রোববার অনুষ্ঠিত হবে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের এই ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল। ১৫দিন আগে থেকেই চলছে বিশাল প্যান্ডেল তৈরীর কাজ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কেন্দ্রীয় নেতা ড. হাসান মাহমুদ, আব্দুল রহমান, খায়রুজ্জামান লিটন, ও এস এম কামালসহ এক ডজন কেন্দ্রীয় নেতা মন্ত্রী এমপি নাটোরের এই কাউন্সিল অধিবেশনে আসছেন বলে জানা গেছে।
কাউন্সিল অধিবেশন সামনে রেখে কার কত জনপ্রিয়তা সেটা প্রদর্শনের জন্য হাজার হাজার ফেষ্টুন ও প্লেকার্ডে ভরে গেছে নাটোরের বাবু শংকর গোবিন্দ চৌধুরী ষ্টেডিয়াম ও নাটোর-বগুড়া মহা সড়কের নাটোর মাদরাসা মোড় থেকে আদালত এলাকা পর্যন্ত। মহাসড়কের উপরে নির্মাণ করা হয়েছে বেশ কিছু তোরণ। বর্ণিল সাজে সেজেছে নাটোর ষ্টেডিয়াম ও আশে পাশের পুরো এলাকা। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের পক্ষে প্রতিদিন চলছে মোটরসাইকেল শোডাউনসহ মিছিল মিটিং। শহরে পোষ্টারিং এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় তুলেছেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থীদের অনুসারীরা। টান টান উত্তেজনার মধ্যেই একার পর এক ছাড়া হচ্ছে নেতাদের বক্তব্যের পাল্টাপাল্টি ভিডিও। নতুন কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ স¤পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক কে পাবেন,তা নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশি আলোচনা চলছে। দুটি পদে প্রায় এক ডজন নেতা আলোচনায় রয়েছেন।
তাদের মধ্যে সভাপতি পদের হেভিওয়েট প্রারঘী দলের বর্তমান সভাপতি ও নাটোর ৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস। এছাড়া আর ও আলোচনায় রয়েছেন সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ,এডভোকেট সিরাজুল ইসলাম পি,পি, সহসভাপতি ও নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী জলি সহ বেশ কয়েকজন রয়েছেন।
অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বেশি আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল, বর্তমান যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মোর্তেজা বাবলু, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মালেক শেখ ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সদস্য রতন সাহা। এছাড়া সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সাবেক পৌর কাউন্সিলর য়ুবলীগ নেতা আরজু শেখ ও সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আহম্মেদ সেলিম । বেশ কিছু দিন থেকে নাটোরের পাঁচ এমপির মধ্যে সদরের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন বাকী চারজন। দলের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে বিষয়টি নতুন মাত্রা পেয়েছে। চার এমপিই শিমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপি জামায়াত থেকে দলে হাইব্রিড নেতা আমদানী ও বিএনপি জামায়াত পৃষ্ঠপোষকতার। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলকও সক্রিয় ভাবে যুক্ত হয়েছেন শিমুল বিরোধী এই জোটে। তারা শিমুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন ত্যাগী পুরাতন নেতাকর্মীদের অবহেলা ও অবমূল্যায়নের।
অপরদিকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি বলেছেন, আগের কাউন্সিলে তিনি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে সর্ব প্রথম সন্ত্রাসের গডফাদার রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে নাটোর থেকে চীরতরে উৎখাত করেছেন। তাই এবারের কাউন্সিলে তাকে সাধারণ সম্পাদক পদে বাঁধা দেয়ার জন্য বিপুল পরিমান টাকা ঢালছে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তার বিরোধী কয়েকজনকে দুলু বিপুল পরিমান টাকা দিয়েছেন যেন তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হতে না পারেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজান বলেছেন, নাটোরকে কুক্ষিগত করে রাখতে চায়, অন্য দল থেকে হাইব্রীড নেতা আমদানী করে আওয়ামী লীগের কণ্ঠরোধ করতে চায় তাদের এই কাউন্সিলের মাধ্যমে প্রতিহত করতে হবে।
নাটোর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও (নাটোর-নওগাঁ) সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রত্না আহমেদ বলেছেন, বিগত কমিটি নবীন প্রবীণ তারুন্য নির্ভর হলেও তেমন কোন কাজ করতে না পারায় তিনি আশাহত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের ব্যবহারের কারণে প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দূরে চলে গেছে, হাইব্রীড কাউয়া লীগ দলে ঢুকে পড়েছে। বাহিরের লোক ঢুকে পড়ায় আওয়ামী লীগ তার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তাই এবার তিনি দলের পরীক্ষিত ও হাইব্রীড মুক্ত কমিটি চান। নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ বলেছেন,এবারের কাউন্সিলে এমন একটা কমিটি হবে যারা গত সাত বছরের যে স্থবিরতা চলছে তা কেটে যাবে।
নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি বলেছেন, স্বাধীনতার পর ২০১৪ সালে একবারই ভোটের মাধ্যমে নাটোরে কমিটি গঠন হয়েছে। সেই কমিটিতেই তিনি সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। এবারো ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠনের তিনি প্রত্যাশা করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, নাটোরের ২০ লাখ মানুষ তাকিয়ে আছে ২০ ফেব্রুয়ারী নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে কারা নেতৃত্বে আসছেন তা দেখার জন্য। এমপি, মন্ত্রী সবই নেতাকর্মীদের অস্থায়ী ঠিকানা। স্থায়ী ঠিকানা হলো আওয়ামী লীগ। প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হলো আন্দোলন, সম্মেলন ও নির্বাচন। এই সম্মেলনে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের জন্য সঠিক নেতৃত্ব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেখ হাসিনা উপহার দিবেন বলে তিনি আস্থা রাখেন।
আরও দেখুন
রাণীনগরে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে ১৫ভরি স্বর্ণের ও
১০০ভরি চান্দির গহনা ছিনতাই নিজস্ব প্রতিবেদক রাণীনগর,,,,,,,,,, নওগাঁর রাণীনগরে দোকান থেকে বাড়ী ফেরার পথে পথ …