চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স বা প্রবাসী আয় এসেছিল। এরপর টানা ছয় মাস রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল এর চেয়ে কম। তবে গত মার্চে আবারও ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। এরমধ্যে আট দেশ থেকেই এসেছে সিংহভাগ রেমিটেন্স। দেশগুলো হলো- সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, কাতার, ওমান ও ইতালি। গত মার্চে এই আট দেশ থেকে ১৬৪ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছে দেশে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে। বাংলাদেশী মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১০৭ টাকা ধরে) যার পরিমাণ ২১ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। মার্চে রেমিটেন্সের পরিমাণ আগের মাস ফেব্রুয়ারির চেয়ে ৪৫ কোটি ৭২ লাখ ডলার বেশি। এছাড়া আগের বছরের একই মাসের তুলনায় গতমাসে রেমিটেন্স বেড়েছে ৮ দশ৪৯ শতাংশ।
একই সময়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়ছে না বিদেশী বিনিয়োগ। যার কারণে বাণিজ্য ঘাটতি ও চলতি হিসাবের ঘাটতির পাশাপাশি সামগ্রিক বৈদেশিক লেনদেনেরও বিশাল ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার ৪৯৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য। এতে করে এক হাজার ৩৮২ কোটি ৮০ লাখ (১৩ দশ৮২ বি) ডলারের বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে বাংলাদেশ। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে দেশীয় মুদ্রায় (প্রতি এক ডলার ১০৭ টাকা ধরে) এর পরিমাণ এক লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। আর রিজার্ভ প্রথমবারের মতো ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০১৭ সালের ২২ জুন। এরপর থেকে করোনার প্রভাব শুরুর আগ পর্যন্ত রিজার্ভ ৩২ থেকে ৩৩ বিলিয়ন ডলারের ঘরে ওঠানামার মধ্যে ছিল। করোনার প্রভাব শুরুর পর বিশ্ববাজারে সুদহার অনেক কমে আসে।
তখন বিশ্বের অনেক দেশ বিদেশী ঋণ কমালেও বাংলাদেশে বেড়ে যায় ,বিশ্ববাজারে দর বৃদ্ধির পাশাপাশি আগের ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রিজার্ভ ৩১ বিলিয়নের ঘরে ওঠা নামা করছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ এ হিসাবে ব্যবহারযোগ্য বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ২২ বিলিয়ন ডলারের বেশি নয়।