নিউজ ডেস্কঃ
আজ ১৭ মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস। কানেক্ট ২০৩০: আইসিটি ফর দ্য সাসটেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোলস ( এসডিজি) বা সংযুক্তি এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এ বছর দিবসটি পালিত হচ্ছে।
বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর কারণে দিবসটি প্রতিবছরের ন্যায় উৎসব মুখর পরিবেশে পালন করা সম্ভব না হলেও ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করছে।
প্রথম আন্তর্জাতিক টেলিগ্রাফ কনভেনশন এবং আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিই) প্রতিষ্ঠার স্মারক হিসেবে ১৯৬৯ সালের ১৭ মে হতে প্রতি বছর বিশ্ব টেলিযোগাযোগ দিবস পালিত হয়ে আসছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির বিপুল সম্ভাবনা এবং একে সমাজ ও অর্থনীতির কল্যাণে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে সকলকে সচেতন করাই দিবসটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য।
১৯৭৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন বা আইটিই-এর সদস্যপদ লাভ করে। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির বিকাশের ধারাবাহিকতায় ২০০৬ সাল হতে ১৭ মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এর মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই উৎপাদন ও ব্যবহারের মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সমৃদ্ধ জীবন ও পরিবেশ সুনিশ্চিত করা। সর্বস্তরের মানুষের কাছে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সুফল পৌঁছে দিতে সংযুক্তির কোন বিকল্প নেই। টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি খাত এই সংযুক্তির মূল চালিকা শক্তি। বর্তমান বিশ্বে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ডিজিটাল ব্যবধান হ্রাসে টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তির অবদান অনস্বীকার্য। ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে মুক্তি, উন্নত স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসেবা, টেকসই অবকাঠামো, সুপেয় পানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, নারীর ক্ষমতায়ন, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি, সম্পদের সঠিক ব্যবহার, টেকসই নগর ব্যবস্থাপনা, শান্তি, ন্যয়বিচার ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান, সর্বোপরি, টেকসই উন্নয়নের জন্য অংশীদারিত্ব সুনিশ্চিত করা তথা এসডিজি এর ১৭টি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তথ্যপ্রযুক্তি সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
মন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাস কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষকে সংযুক্ত রাখার প্রয়োজনীয়তাও বেড়েছে।
বিশ্বব্যাপী লকডাউনে আবাসিক ইন্টারনেট এর চাহিদা উল্লেখ জনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিত্য ব্যবহার্য পণ্যের হোম ডেলিভারি , কোভিড-১৯ ও সাধারণ স্বাস্থ্য পরামর্শের জন্য টেলিমেডিসিনসেবা, ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম, ভিডিও কনফারেন্স, অনলাইন প্রশিক্ষণ, দূর-শিক্ষণকার্যক্রম, ভিডিও স্ট্রিমিং ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যবহার বৃদ্ধির কারণেই-কমার্স, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাখাত ও আবাসিক ব্যবহারকারীদের জন্য পারস্পরিক সংযুক্তি অপরিহার্য হয়ে ঊঠেছে। এ কারণে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ এর চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছ। তিন বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর আওতাধীন দপ্তর ও সংস্থাসমুহ সফলভাবে এ চাহিদা পূরণ করছে। দেশ ব্যাপী বিস্তৃত শক্তিশালী টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে এ সংযুক্তি সুনিশ্চিত হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী বছরগুলোতে যে কোন মহামারি প্রতিরোধে সংযোগ চাহিদা আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রচলিত প্রযুক্তির পরিবর্তে উচ্চগতির ফাইবার ভিত্তিক কানেকটিভিটি বৃদ্ধি করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে টেলিমেডিসিন সেবা, দূরশিক্ষণ, অনলাইন প্রশিক্ষণ, মহামারী আক্রান্ত এলাকা নির্ধারণ, সামাজিক সুরক্ষা প্রাপ্তির তালিকা তৈরি প্রভৃতি খাতে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ও বিগডাটা প্রয়োগ বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও ই-কমার্স, আউটসোর্সিং, ফ্রিল্যান্সিং, ভিডিও স্ট্রিমিং,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বর্ধিত চাহিদা পূরণকরতে টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক এর ধারণ ক্ষমতা ও সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে ৫-জি নেটওয়ার্ক এখন সময়ের দাবি।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে ৫-জি প্রযুক্তি চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ৫জি এর জন্য টেলিকম কর্মকর্তাদের দক্ষ ও সক্ষম করে গড়ে তুলতে হবে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে তথ্য প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে পরিবর্তিত জীবন ব্যবস্থার মধ্যে এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অগ্রগামী হবে বলে মন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।