নিউজ ডেস্ক:
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোয় শান্তি প্রতিষ্ঠায় জনমত গঠন এবং মহামারি করোনায় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করার স্বীকৃতি হিসেবে ‘আউটস্ট্যান্ডিং ইয়াং লিডার অব এশিয়া’ পেলেন বাংলাদেশের মেডিকেল ছাত্র রাকিব আল হাসান। তরুণ নেতা হিসেবে এখন থেকে তিনি এশিয়ার ৪৮টি দেশে শিশু ও নারী অধিকার, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গণতন্ত্র ও শান্তি নিয়ে কাজ করবেন। মালয়েশিয়াভিত্তিক এশিয়ান ইয়ুথ কাউন্সিল গত বৃহস্পতিবার রাতে পুরস্কারের এই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়।
২৪ বছর বয়সী রাকিব আল হাসান ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র।
১২ আগস্ট আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে এশিয়ার ১০ জন আউটস্ট্যান্ডিং ইয়াং লিডার বা অসাধারণ তরুণ নেতার নাম ঘোষণা করা হয়। রাকিব তাঁদেরই একজন। বাকি নয়জনের দুজন করে ভিয়েতনাম ও আফগানিস্তানের এবং একজন করে মালয়েশিয়া, নেপাল, ফিলিপাইন, চীন ও রাশিয়ার।
১৮ থেকে ৩৫ বছরের তরুণ নেতারা পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
রাকিব জানান, পুরস্কার পাওয়ায় বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে তাঁর মূল কাজের ক্ষেত্র হবে আফগানিস্তান, ইরান ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।
মালয়েশিয়ায় এশিয়ান ইয়ুথ কাউন্সিলের সেক্রেটারি আজিজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে পুরস্কারের ব্যাপারে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, রাকিব আল হাসান অসাধারণ, সৃজনশীল এবং কাজের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ একজন তরুণ। রাকিবের কাছে প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে আজিজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা আশা করি, রাকিব অন্যদের জন্য দৃষ্টান্ত হবেন। বিশেষ করে তরুণেরা যেন জানতে পারেন মহামারিতে কীভাবে ভূমিকা রাখতে হয়। তরুণদের উন্নয়নে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রাকিবকে যেন সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া হয়। তিনি বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় তরুণ নেতা হতে পারবেন।’
এশিয়ান ইয়ুথ কাউন্সিলের বর্তমান সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রীর হুন সেনের ছেলে হুন মেনি। হুন মেনি নিজ দেশের পার্লামেন্ট সদস্য।
রাকিব জানান, তিনি কুর্দিস্তানের তরুণদের আন্দোলন, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান যুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের নেতাদের জনমত গঠন এবং আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারে নৈতিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। সেই সঙ্গে করোনাকালে শিশু স্বাস্থ্য অধিকার আদায়ে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেছেন।
কুমিল্লার লাকসামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ এবং রাজিয়া সুলতানা দম্পতির চার ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার বড় রাকিব। বাবা আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলের স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে অংশগ্রহণ ভালো লাগে। মেডিকেলের ছাত্র হিসেবে ওর পড়ার চাপ বেশি। অনেক সময় দেখা যায়, দুটো মিলিয়ে ওর ওপর অনেক চাপ পড়ে যায়।’
ভবিষ্যৎ স্বপ্নের কথা বলতে গিয়ে রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, তিনি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে সরকারে যুক্ত হতে চান। দায়িত্বশীল পদে থেকে দেশের সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে চান এবং অনিয়ম-অব্যবস্থাপনামুক্ত অবকাঠামোগত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চান।