নিউজ ডেস্ক:
মুক্তিযুদ্ধে ভারতীয় নৌবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ নৌ-কমান্ডো অভিযানের ঘটনাবলি নিয়ে লেখা অপারেশন এক্স গ্রন্থের বাংলা সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
সোমবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ক্যাপ্টেন এমএনআর সামন্ত ও সন্দীপ উন্নিথানের লেখা গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্টজনরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এই বীরত্বপূর্ণ অভিযানে অংশ নেওয়া ভারতীয় ও বাংলাদেশি প্রবীণ সৈন্যরা এবং সহ-লেখক সন্দীপ উন্নিথান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী।
অপারেশনটির পরিকল্পনা করেছিলেন তৎকালীন ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এসএম নন্দা ও ক্যাপ্টেন (পরবর্তী সময়ে ভাইস অ্যাডমিরাল) মিহির কে রায়, যা বাস্তবে রূপ দেন ক্যাপ্টেন এমএনআর সামন্ত। ৪৫০ জনেরও বেশি নৌ-কমান্ডোকে সেসময় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাদের পূর্ব পাকিস্তানে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছিল, যাতে নৌযান, জেটি ও সামুদ্রিক অবকাঠামো ধ্বংস করে পাকিস্তানি সামরিক এবং খাদ্য সরবরাহ লাইনগুলোকে ব্যাহত করে নিজেদের জন্য পুনরায় রসদ জোগান দিতে না পারে।
শেষ পর্যন্ত ১৩ দিনের মধ্যেই তাদের দ্রুত আত্মসমর্পণ করতে হয়। কমান্ডো অপারেশনের পাশাপাশি বইটিতে গানবোট পদ্মা ও পলাশ দিয়ে মোংলা বন্দরে অভিযানের কথাও বলা হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর দেওয়া গানবোট দুটিতে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশেরই নাবিক ছিলেন।
নেভাল কমান্ডো অপারেশন এক্স বা এনসিও (এক্স) ছিল ‘অপারেশন জ্যাকপট’র অংশ, যার অধীনে মুক্তিবাহিনীর গোপন প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ করা হয়। সামগ্রিকভাবে ১৯৭১ সালের আগস্ট থেকে নভেম্বরের মধ্যে কমান্ডোরা এক লাখ টন শত্রু নৌযান ডুবিয়ে দেয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের বন্দরগুলো সম্পূর্ণরূপে অবরুদ্ধ করে।
প্রকৃতপক্ষে এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্বে পরিচালিত বৃহত্তম গোপন অভিযান। ৪৮ বছর ধরে অপ্রকাশিত থাকা এ গল্পটি প্রথম ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে। ক্যাপ্টেন এমএনআর সামন্তের ব্যক্তিগত নোট ও অপারেশনে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় নৌসেনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার আলোকে সংকলিত হয়েছে।