নিউজ ডেস্ক:
ভূমি উন্নয়ন কর অনলাইনে দেওয়া যাবে। আগামী সপ্তাহ থেকে সারা দেশে এর রেজিস্ট্রশন প্রক্রিয়া শুরু হবে। আগামী জুলাই থেকেই পুরোদমে অনলাইনে ভূমি কর আদায় কার্যক্রম শুরু হবে। রেজিস্ট্রশন প্রক্রিয়া শুরুসহ অনলাইনে ভূমি কর আদায়ের নির্দেশনা দিয়ে বৃহস্পতিবার (২০ মে) মন্ত্রণালয় থেকে দেশের সব জেলা প্রশাসনকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, জনগণের হয়রানি লাঘব, অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধ ও সরকারি রাজস্ব আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় একটি অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে। এই প্লাটফর্মের মাধ্যমে নাগরিকরা ঘরে বসেই অনলাইনে ভূমি কর প্রদান করতে পারবেন।
জেলা প্রশাসনকে পাঠানো নির্দেশনা থেকে জানা গেছে, অনলাইনে ভূমি কর প্রদান করতে হলে ভূমির মালিককে প্রথমে নিবন্ধন করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল ফোন নম্বরসহ অন্যান্য তথ্য প্রদান করে নিবন্ধিত হতে হবে। একবার নিবন্ধিত হলে ওই ব্যক্তিকে ভবিষ্যতে আর নিবন্ধন করার দরকার হবে না।
তিন প্রক্রিয়ায় নিবন্ধন সম্পন্ন করা যাবে
১. অনলাইন পোর্টাল land.gov.bd অথবা www.ldtax.gov.bd -এ প্রবেশ করে এনআইডি ও মোবাইল ফোন নম্বর এবং জন্ম তারিখ এন্ট্রি করার মাধ্যমে।
২. কল সেন্টার নম্বর ৩৩৩ বা ১৬১২২-তে ফোন করে এনআইডি নম্বর, জন্ম তারিখ ও জমির তথ্য প্রদান করে। এবং
৩. এনআইডি ব্যবহার করে যে কোনও ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে।
উল্লেখ্য, নিবন্ধনবিহীন ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে খাজনা প্রদানের জন্য গেলে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা প্রথমেই তার সকল ডাটা এন্ট্রি করবেন। পাশাপাশি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নিজ উদ্যোগে হোল্ডিং মালিকদের তথ্য এন্ট্রি করবেন।
নিবন্ধন সম্পন্ন হওয়ার পর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নিজে ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বসেই এলডি ট্যাক্স সিস্টেমে অন্যান্য ডাটা অনলাইনে এন্ট্রি করবেন।
প্রজ্ঞাপনে রেজিস্ট্রেশনসহ অনলাইনে ভূমিকর প্রদানের যাবতীয় কার্যক্রমের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
যা বললেন ভূমি সচিব
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই পদ্ধতি চালুর ফলে মানুষকে আর তহশিল অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। তহশিল অফিসের সঙ্গে মানুষের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ করা গেলে দুর্নীতি অর্ধেকই কমে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এছাড়া এই প্রক্রিয়ায় আমাদের শতভাগ ভূমি কর আদায় হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যকার অর্থ তসরুপ বা রাজস্ব আদায় করে সরকারি কোষাগারে জমা না দেওয়ার যে প্রবণতা রয়েছে, সেটা বন্ধ হবে।’
ভূমি সচিব বলেন, ‘বিভিন্ন ক্ষেত্রে একজনের খাজনা অন্য জনে দিয়ে পরে টেম্বারিং করে, সেই জমি তার দাবি করার তথ্য অনেক সময় আমাদের কাছে আসে। অনলাইনে খাজনা আদায় করা গেলে এই বিষয়টিও বন্ধ হবে।’
একযোগে সারা দেশে অনলাইনে খাজনা আদায় শুরু হবে উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘আগামী সপ্তাহের শেষ দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম শুরু হবে। যার রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তিনি খাজনা দিতে পারবেন।’
মোবাইল ফোন এবং জাতীয় পরিচয় পত্রের মাধ্যমে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রেশনের ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২৮ অক্টোবর অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার সুবিধা পরীক্ষামূলকভাবে চালু করে ভূমি মন্ত্রণালয়। চলতি বছরের জুলাই থেকে সারা দেশে ভূমি কর দেওয়ার এই সুবিধা নিশ্চিত করার কথা ওই সময় জানানো হয়েছিল।