ডিমে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। বছরে উৎপাদন হবে ১ হাজার ৭৮১ কোটি ডিম এবং এর বাজার মূল্য হবে ১২ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, মেধাবী জাতি গড়তে প্রতিদিন অন্তত একটি ডিম খাওয়া উচিত। সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ২০১৮-১৯ অর্থবছরেই সে লক্ষ্য পূরণের খুবই কাছাকাছি ছিল দেশ। ডিমের মাথাপিছু কনজাম্পশন ছিল ১০৩টি। এ বছর সে লক্ষ্য অবধারিতভাবেই পূর্ণ হতে চলেছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে মাথাপিছু ডিম খাওয়ার পরিমান ১০৫টিতে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ অর্জনের মধ্য দিয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান প্রভৃতি দেশকে পেছনে ফেলে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।
ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি জানান-, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ডিমের উৎপাদন ছিল ১০৯৯ দশমিক ৫২ কোটি, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১১৯১ দশমিক ২৪ কোটি, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ১৪৯৩ দশমিক ১৬ কোটি, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ১৫৫১ দশমিক ৬৬ কোটি, এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৭১০ দশমিক ৯৭ কোটি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রায় ১৭৮১ কোটি ডিম উৎপাদিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। শাহরিয়ার বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৮৩৩৮ দশমিক ৬৮ কোটি টাকার ডিম কেন্দ্রিক বাণিজ্য হয়েছে। পরবর্তী অর্থবছরগুলোতে এ পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ১০৪৫২ কোটি, ১০৮৬১ কোটি এবং ১১৯৭৬ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের শেষ নাগাদ প্রায় ১২৪৬৭ কোটি কিংবা তারও অধিক টাকার অর্থিক লেনদেন হবে ডিম কে কেন্দ্র করে।
চাহিদার বিপরীতে অধিকাংশ খাদ্যেই প্রাপ্যতার হার কম বাংলাদেশের। তবে ডিমের ক্ষেত্রে চাহিদা আর জোগানের পার্থক্য খুব বেশি নয়। অধিদপ্তরের তথ্য মতে, দেশে বছরে প্রতিটি মানুষ গড়ে ৯৩টি ডিম খেতে পারছে। ১০ বছর আগে এ সংখ্যা প্রায় অর্ধেক ছিল। সে সময় জনপ্রতি ডিমের প্রাপ্যতা ছিল ৫১টি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য মতে, জনপ্রতি বছরে ন্যূনতম ডিম খাওয়া উচিত ১০৪টি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, গত এক দশকের ব্যবধানে ডিমের উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা দেখিয়েছেন দেশের খামারিরা। উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা ছিল। সেগুলোকে চিহ্নিত করে এরই মধ্যে কাজও শুরু হয়েছে। ডিম উৎপাদনে খামারিদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিপণন কৌশল ও বাজারের সঙ্গে তাদের সংযোগ বাড়াতে কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। আর বিচ্ছিন্নভাবে উৎপাদন না করে খামারিদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।