নিজস্ব প্রতিবেদক, ঈশ্বরদী
১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনযাত্রায় ঈশ্বরদীতে বোমা ও গুলি বর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী আবুল হাকিম টেনু (৫৮) বৃহস্পতিবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন (ইন্না…..রাজেউন)। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে পরিবারের পক্ষ হতে নিশ্চিত করা হযেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্লাডসুগারসহ দূরারোগ্য ব্যধিতে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি ৩ মেয়ে ও স্ত্রী রেখে গেছেন।
উল্লেখ্য, পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোস্তম আলী গত ৩০ জুন ওই মামলার শুনানীর দিন ধার্য্য করে উপস্থিত ৩০ আসামীর জামিন বাতিল করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। অন্যান্যদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। ২রা জুলাই ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা আবদুল হাকিম টেনু ওই মামলায় আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণ করেন।
৩ জুলাই পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রোস্তম আলী এই মামলায় ৯ জনের ফাঁসি, আবুল হাকিম টেনুসহ ২৫ জনের যাবজ্জীবন, ১৩ জনের ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। পাশাপাশি মৃত্যুদন্ড প্রাপ্তদের ৫ লাখ, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের ৩ লাখ এবং ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্তদের ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। রায় ঘোষণার কয়েকদিন পর মৃত্যুদন্ডাদেশ প্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন দন্ডাদেশ প্রাপ্তদের রাজশাহী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। রাজশাহী কারাগারে টেনুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে তাকে কারাগারের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
গত ২১ জুলাই এই দন্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের পেেক্ষ হাইকোর্টে আপিল আবেদন করা হয়। ২০শে আগষ্ট মৃত্যুদন্ডাদেশপ্রাপ্ত ৮ জনসহ মোট ৪৩ জনের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের বেঞ্চ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা হতে ট্রেনে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলের নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামড়া লক্ষ্য করে বোমা ও গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে আবারও ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রæত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য তা সিআইডিতে (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) পাঠান। পরে সিআইডিতদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ।
চার্জশিটে নতুনভাবে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়। মামলা চলাকালে সুদীর্ঘ ২৫ বছরে ৫ জন আসামী মৃত্যুবরণ করে।
আরও দেখুন
ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের অপসারণের দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক,নলডাঙ্গা:হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর অন্যায় অবিচারের অভিযোগ করে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান আকরামুল …