রবিবার , সেপ্টেম্বর ৮ ২০২৪
নীড় পাতা / অর্থনীতি / নলডাঙ্গায় “প্রতিকেজি ১০ টাকা দরে চাল বিতরণ ও সৃষ্ট জটিলতা”

নলডাঙ্গায় “প্রতিকেজি ১০ টাকা দরে চাল বিতরণ ও সৃষ্ট জটিলতা”

বিশেষ প্রতিবেদকঃ ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশ দুর্বার। ক্ষুদামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে বাংলাদেশ সরকার স্বল্প আয়ের মানুষ ও দুঃস্থদের মাঝে ভর্তুকি দিয়ে প্রতি কেজি চাল ১০ টাকা দরে কার্ডধারী ব্যক্তিদের মাঝে বিতরণ কার্যক্রম চালু করেছে ।

তারই ধারাবাহিকতায়, গতকাল থেকে শুরু হয়েছে নলডাঙ্গা উপজেলায় সরকার কর্তৃক ভর্তুকি দিয়ে  কার্ডপ্রতি ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ, স্বচ্ছ কার্ডধারী প্রতিজন পাবে ৩০ কেজি করে। চাল বিতরণ চলবে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রতি সোমবার, মঙ্গলবার, বুধবার সকাল দশটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত।

নলডাঙ্গা উপজেলাধীন পিপরুল ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ইউনিয়নের ৩টি কেন্দ্র থেকে ৩ জন ডিলারের মাধ্যমে এই চাল বিতরণ হচ্ছে। পিপরুল ইউনিয়ন ডিলারদের দেয়া তথ্যমতে, এই ইউনিয়নে মোট ১৬৩৩ জন কার্ডধারী ভোক্তার মাঝে এই চাল বিতরণ করা হচ্ছে। পিপরুল ইউনিয়ন জুড়ে বরাদ্দকৃত চালের পরিমাণ ৪৮ টন ৯৯০ কেজি । 

পিপরুল ইউনিয়নের ডিলারগণ ও বিতরণ কেন্দ্রের নামঃ  
ডিলারঃ সাবেক যুবলীগ নেতা, বর্তমানে ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী  দেওয়ান মোঃ শাহজালাল। আওতাধীন ৫৪৫ জন। কেন্দ্রঃ পাটুল।
ডিলারঃ আমজাদ মাস্টার। আওতাধীন ৫৪৪ জন। কেন্দ্রঃ ঠাকুর লক্ষীকোল, সোনারমোড়।
ডিলারঃ আনিসুর রহমান, আওতাধীন ৫৪৪ জন। কেন্দ্রঃ পিপরুল সেন্টার বাজার ।

তবে রয়েছে অফিসিয়াল কিছু জটিলতা। এই জটিলতার কারণে প্রায় অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তালিকাভুক্ত মৃত ব্যক্তির নামে ইস্যু করা কার্ড নিয়ে আসা পরিবারের সদস্যের এবং কার্ড হারিয়ে ফেলা ব্যক্তিদের চাল পাওয়া না পাওয়া নিয়ে।

এই বিষয়ে, নলডাঙ্গা উপজেলার খাদ্য পরিদর্শক মামুনুর রশিদ নারদ বার্তাকে বলেন, “উপজেলার প্রতিটি পয়েন্টে অত্যন্ত সুষ্ঠভাবে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। আইন মোতাবেক, কার্ড ইস্যূ করা ব্যক্তি ছাড়া অন্য কাউকে কোন ভাবেই চাল দেয়া হবেনা। এই চাল ঐ ইস্যুকৃত ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা সংগ্রহ করতে পারবেন। তবে ইস্যুকৃত ব্যক্তি যদি মৃত হোন তাহলে ঐ ব্যক্তির নামে আসা চাল পরিবারের অন্যকেউ পাবেন না। ইস্যুকৃত মৃত ব্যক্তির পরিবারের কেউ অফিসিয়ালি নাম পরিবর্তন করে ডিলারের কাছে কার্ড আনলে এই চাল পাবেন।”

উদ্ভুত এই জটিলতায় ভুক্তভোগীদের করণীয় সম্পর্কে নারদ বার্তাকে তিনি আরও বলেন, “অফিসিয়ালি নাম পরিবর্তন করতে ভুক্তভোগীদের ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে থানায় জিডি করে তার ফর্ম নাটোর ফুড অফিসে জমা দিতে হবে, পরবর্তীতে ফুড অফিস এই কার্ড জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ইস্যু করে তালিকাভুক্ত ভুক্তভোগীদের প্রদান করা হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কার্ড না আনলে তাদের নামে আসা চাল ভুক্তভোগীরা পাবেন না, ঐ চাল ডিলার কর্তৃক সংরক্ষণ করা হবে, ডিলার এই চাল বিক্রয় করতে পারবেন না এবং পরবর্তী মাসে ডিলার ঐ সংখ্যক(চলতি মাসে চাল না পাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা) ব্যক্তির নামে চাল উত্তোলন করতে পারবেন না, ঐ উদ্বৃত্ত চাল পরবর্তী মাসে নাম পরিবর্তিত স্বচ্ছ কার্ডধারীদের মাঝে দেয়া হবে।”

এই জটিলতা অবসানে ভুক্তভোগীদের সর্বোচ্চ সহায়তা দেয়ার মনোভাব ব্যক্ত করেন এই সরকারী কর্মকর্তা।

তালিকাভুক্ত অথচ কার্ড না থাকা ব্যক্তি, মৃত ব্যক্তিদের পরিবারের চাল নিতে আসা সদস্যদের কেউ কেউ চাল না পাবার কথা শুনে হা হুতাশ করেন এবং স্বচ্ছকার্ড নেয়ার এই দীর্ঘপথ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। “জনপ্রতি ৩০ কেজি করে ১০ টাকা দরের চাল নিতে পেরে ফেলবে স্বস্তির নিঃশ্বাস, আর চাল নিতে এসে সামান্য ভুলের কারণে চাল নিতে না পারায় কেউবা ফেলবেন আফসোসের দীর্ঘশ্বাস।   

ডিলার পক্ষের একজন এ বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ভুক্তভোগীদের কার্ড সংরক্ষণে গুরুত্বহীনতাকে দোষ দিয়ে বলেন, “চাল নিতে হলে তাদের(ভুক্তভোগী) কার্ড আনতেই হবে, কার্ড ছাড়া চাল দেয়া হবেনা। আমরা মানবিকতার দিক থেকে স্বচ্ছকার্ড উত্তোলনে এদের(ভুক্তভোগী) সর্বোচ্চ সহায়তা দেবো।

খাদ্য অধিদপ্তর নলডাঙ্গা শাখার তথ্যমতে, নলডাঙ্গা উপজেলার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২০৩ টন ৮৮০ কেজি চাল এবং এই চাল উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মোট ১২ জন ডিলারের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। তার বিপরীতে উপজেলায় মোট কার্ডধারী ভোক্তা আছে ৬,৭৯৬ জন ।

আরও দেখুন

রাণীনগরে মারপিটে আহত গৃহবধুর 

মৃত্যু নিজস্ব প্রতিবেদক, রাণীনগর: নওগাঁর রাণীনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র  করে মারপিটে আহত গৃহবধু রিজিনা বিবি …